নির্বাচনী প্রচারণায় সহিংসতার শিকার বিরোধীরা: এইচআরডব্লিউ
বাংলাদেশে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে ‘দমনমূলক পরিবেশ’ বিরাজ করছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, এ ধরনের অবস্থা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলবে। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এইচআরডব্লিউ এসব কথা বলে।
নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় নিরপেক্ষ অনুসন্ধান দাবি করেছে সরকারের কাছে। সহিংসতার শিকার ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করারও দাবি করেছে এইচআরডব্লিউ।
‘ক্রিয়েটিং প্যানিক: বাংলাদেশ ইলেকশন ক্র্যাকডাউন অন পলিটিক্যাল অপন্যান্টস অ্যান্ড ক্রিটিকস’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি ৩৭ পৃষ্ঠার। সেখানে বলা হয়, ব্যাপক মাত্রায় নজরদারি, মুক্তভাবে মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে বাধার মতো কর্তৃত্বপরায়ণ পদক্ষেপ চলছে। এর ফলে একধরনের ভয়ের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিপক্ষ সব রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের ওপর সহিংস হামলা চলছে। সরকার এসব ক্ষেত্রে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। পুলিশ বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের আটক ও গ্রেপ্তার করছে।
এইচআরডব্লিউয়ের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলেন, নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক মানের করতে হলে পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ হতে হবে। তারা যেন শাসক দলের মতো কাজ না করে, তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনী প্রচারণায় যে সহিংসতা চলছে, এর প্রধান শিকার হচ্ছে বিরোধীরা। পুলিশ ও নির্বাচন কমিশন যে সঠিক আচরণ করছে না, এই ঘটনা তারই প্রমাণ।
এইচআরডব্লিউয়ের প্রতিবেদনটি তৈরি করতে ৫০ জনের বেশি রাজনৈতিক কর্মী, শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধির সাক্ষাৎকার নেয়। এর পাশাপাশি আদালতের নথি ঘাঁটে।
সরকার সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরোধী মতামতকে জোর করে রুদ্ধ করার চেষ্টা করছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করে এইচআরডব্লিউ। সংস্থাটি সাংবাদিকদের উদ্ধৃত করে বলেছে, তাঁদের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বড় বাধা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এক পত্রিকার সম্পাদককে উদ্ধৃত করে এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এ এক ভয়ের সংস্কৃতি, ভীতিকর পরিবেশ।’