২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ধানের শীষ পেলেন হামিদ, জিন্নাহ কবীর কারাগারে

আবদুল হামিদ ও এস এ জিন্নাহ কবির
আবদুল হামিদ ও এস এ জিন্নাহ কবির

মানিকগঞ্জ-১ (শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর) আসনে অবশেষে ধানের শীষ প্রতীক ফিরে পেলেন দলের প্রার্থী খোন্দকার আবদুল হামিদ ওরফে ডাবলু। এই আসনে বিএনপির অপর প্রার্থী ছিলেন এস এ জিন্নাহ কবীর। নাশকতার একটি মামলায় গতকাল সোমবার তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, কৌশলগত কারণে এই আসনে তিন প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেয় বিএনপি। তাঁরা হলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য জিন্নাহ কবীর ও আবদুল হামিদ এবং জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক। ৯ ডিসেম্বর সকালে একই সঙ্গে খোন্দকার আবদুল হামিদ ও জিন্নাহ কবীরকে মনোনয়নের চিঠি দেয় কেন্দ্র। এতে তোজাম্মেল হকের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। সে অনুসারে আবদুল হামিদ ও জিন্নাহ কবীর—উভয়েই জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। পরের দিন জিন্নাহ কবীরকে দলীয় প্রতীক বরাদ্দের জন্য জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই দিনই রিটার্নিং কর্মকর্তা জিন্নাহ কবীরকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দিলে তিনি প্রচারণায় নামেন।

তবে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী খোন্দকার আবদুল হামিদ ধানের শীষ প্রতীকে তাঁর প্রার্থিতা ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০ ডিসেম্বর আদালত জিন্নাহ কবীরের প্রার্থিতা স্থগিত করেন। একই সঙ্গে আদালত আবদুল হামিদকে ধানের শীষ প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। গত রোববার এই রায়ের বিরুদ্ধে জিন্নাহ কবীর আপিল করেন।

খোন্দকার আবদুল হামিদ বলেন, গতকাল উচ্চ আদালতের রায়ের ওপর চেম্বার জজ আদালত ‘নো অর্ডার’ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ধানের শীষ ফিরে পেয়েছেন।

এদিকে ঘিওর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় গতকাল মানিকগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে জিন্নাহ কবীরকে কারাগারে পাঠান।

এজাহার এবং আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুলাই ঘিওর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা ওই মামলায় জিন্নাহ কবীরসহ বিএনপির ২২ নেতা-কর্মী নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় জিন্নাহ কবীর উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নেন। গতকাল দুপুরে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে তিনি জামিনের আবেদন করেন। তবে আবেদন নামঞ্জুর করে আদালতের বিচারক রওশন জাহান তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এই আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী খোন্দকার আবদুল হামিদ ছাড়াও নৌকা প্রতীকে বর্তমান সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী খোরশেদ আলম হাতপাখা, বাংলাদেশের মুসলিম লীগের ফারুক হোসেন হারিকেন প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ধানের শীষ ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন।

বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আবদুল হামিদ জেলা বিএনপির সহসভাপতি। তিনি জানান, আজ মঙ্গলবার তিনি নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা শুরু করবেন। তিনি আরও বলেন, তাঁর বাবা বিএনপির একসময়ের কান্ডারি ছিলেন। তাঁর বাবা এই আসন থেকে পাঁচবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাবার হাত ধরেই তিনি ছাত্ররাজনীতি থেকে এখনো দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এ কারণে দলীয় নেতা-কর্মী এবং ভোটারদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। নির্বাচন নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু হলে ধানের শীষের জয় নিশ্চিত বলে তিনি দাবি করেন।