টেলিযোগাযোগ খাতের বিকাশ এবং এ খাতের প্রবৃদ্ধি আরও বাড়াতে টেলিযোগাযোগ নীতিমালাকে আধুনিক ও সময়োপযোগী করতে হবে।
দেড় দশক আগের নীতিমালাকে সংশোধন করে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের সহায়তায় তা দ্রুত অনুমোদন ও কার্যকর না করলে টেলিযোগাযোগ খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক কর্মশালায় এ খাতের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা ও টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। টেলিযোগাযোগ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তর্জাতিক সংগঠন জিএসএমএ ও বাংলাদেশে মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর প্রতিষ্ঠান অ্যামটব যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
জিএসএমএ-এশিয়ার আঞ্চলিক প্রধান আইরিন ইং বলেন, এ দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে টেলিযোগাযোগ খাত অনেক অবদান রেখে চলেছে। কিন্তু মুঠোফোনের সব সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য আইনগত ও নীতিগত কাঠামো অনেক বেশি প্রয়োজন। মুঠোফোনের বহুমাত্রিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে নীতির সংশোধন জরুরি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের নানা সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ১৯৯৮ সালে নীতিমালা অনুসরণ করে বাংলাদেশের মুঠোফোন খাত অনেক এগিয়ে গেছে। কিন্তু তখনকার বাস্তবতার সঙ্গে এখনকার বাস্তবতার কোনো মিল নেই। সে নীতিমালায় ভয়েস কল আর এসএমএসকে মাথায় রাখা হয়েছিল। আর এখন এর সঙ্গে অনেক কিছুই যোগ হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, তথ্য, বিনোদন ও সংবাদসেবাসহ নানা ধরনের মূল্য সংযোজিত সেবা যোগ হয়েছে। মুঠোফোন মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেবা খাতটির বিকাশ এবং এ খাতে শৃঙ্খলা আনতে নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
বক্তারা আরও বলেন, ‘অতিরিক্ত করের বোঝা’ এ খাতকে পিছিয়ে দিচ্ছে। সরকার রাজস্ব পেলেও দীর্ঘ মেয়াদে পুরো খাতের জন্য এটা ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন তাঁরা। খাতটিকে রক্ষা করার জন্য নীতি ও আইনগত স্থিতিশীলতা জরুরি বলেও উল্লেখ করেন তাঁরা।
অ্যামটবের মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবীর বলেন, করের হার হওয়া উচিত সহযোগিতামূলক ও দীর্ঘমেয়াদি এবং নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, এ খাতের উন্নয়নে যা যা করা দরকার তার সবই সরকার করবে।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব হুসনুল মাহমুদ খান, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিবেক সুদ, বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াদ সাতারা, রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুপন বীরাসিংহে, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, এয়ারটেলের প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা রজনীশ কাউল, বেসিস সভাপতি শামীম আহসান প্রমুখ।