দেশে বছরে একজন ডিম খায় ১০৪টি
বাংলাদেশে বছরে একজন মানুষ গড়ে ডিম খায় ১০৪টি। সবচেয়ে কম দামে প্রোটিন পাওয়া যায় ডিম থেকে। ডিমের গুরুত্ব তুলে ধরতে স্কুলে পাঠ্যসূচির পাশাপাশি মিড-ডে মিলে ডিম অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন পোলট্রি খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
আজ শুক্রবার বিশ্ব ডিম দিবস। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘প্রতিদিন ডিম খাই, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াই’। দিবসটি উপলক্ষে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ওয়ার্ল্ড’স পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা একটি ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক শওকত আলী। সেখানে বলা হয়, গত ১০ বছরে দেশে ডিমের উৎপাদন বেড়েছে ২ দশমিক ৮৬ গুণ। বছরে দেশে মাথাপিছু ডিম খাওয়ার পরিমাণ এখন ১০৪টি। ২০৩০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা ১৬৫টিতে উন্নীত হবে।
ডিমের নানা পুষ্টিগুণ তুলে ধরে বলা হয়, ডিমের কুসুমের মধ্যে বেশি পুষ্টি উপাদান আছে, তাই কুসুম খাওয়া বাদ দেওয়া যাবে না।
প্রবন্ধে ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার (ইউএসডি) এর গবেষণার সূত্র দিয়ে বলা হয়, প্রোটিন জাতীয় খাবারের মধ্যে ডিম হচ্ছে সহজলভ্য ও গুরুত্বপূর্ণ উৎস। সবচেয়ে কম দামে প্রোটিন পাওয়া যায় ডিম থেকে। একজন সুস্থ ব্যক্তি দিনে তিনটি ডিম খেতে পারবে। ডিম সব বয়সীর জন্য উপকারী। করোনা প্রতিরোধের জন্য ভিটামিন-ডি বেশি প্রয়োজন। আর ডিম হচ্ছে ভিটামিন ডির বড় উৎস।
বিপিআইসিসির সভাপতি মসিউর রহমান ডিমকে পাঠ্যসূচিতে এবং স্কুলের মিড-ডে মিলে অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, ডিমের বাজার এখন ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। অনেক প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁদের এই পোলট্রি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত করার চিন্তা হচ্ছে।
স্কুলে মিড-ডে মিলে ডিমকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সচিব বলেন, এ বিষয়ে তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কথা বলবেন। পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান। ডিমকে কীভাবে আরও সহজলভ্য করা যায়, সে বিষয়ে ভাবার জন্য আহ্বান জানান সচিব।
প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নাথু রাম সরকার বলেন, দেশে পুষ্টি ব্যবস্থার অনেক উন্নতি ঘটেছে। ডিম খাওয়ার প্রবণতা মানুষের মধ্যে বেড়েছে। ২০১০ সালে ডিমের উৎপাদন ছিল ৬০০ কোটি এখন সেটা ১ হাজার ৭৩৬ কোটি। এ ছাড়া বলেন, বাংলাদেশে নকল ডিমের কোনো অস্তিত্ব নেই।
বিপিআইসিসির সভাপতি মসিউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লুৎফে ফজলে রহিম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষক খালেদা ইসলাম ও কয়েকজন জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।