তাবিথের পক্ষে মাঠে খালেদা জিয়া
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে মাঠে নেমেছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ শনিবার বিকেলে হঠাৎ করেই প্রচারে নামেন খালেদা জিয়া।
প্রথম দিন প্রচারে নেমে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টায় খালেদা জিয়া গুলশান-১, গুলশান-২, বাড্ডা, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, হাতির ঝিল এলাকায় তাবিথের পক্ষে বাস মার্কায় ভোট চান। বিভিন্ন দোকানে ঢুকে নিজ হাতে লিফলেটও বিতরণ করতে দেখা যায় তাঁকে। রাতে ফেরার পথে হাতির ঝিল এলাকায় গাড়ি থেকে নামেন খালেদা জিয়া। এসময় এক ব্যক্তির প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি।’ ওই ব্যক্তি তখন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমরা ইতিবাচক রাজনীতি চাই।’ জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, তাঁরা ‘পজিটিভ’ রাজনীতি করেন, ‘নেগেটিভ’ রাজনীতি করেন না। যাঁরা ‘নেগেটিভ’ রাজনীতি করে তাদের প্রতিহত করতে হবে।
সাধারণত বিএনপির প্রার্থীরা বা তাঁদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ নেতারা কে কোথায় কখন প্রচারে নামবেন তা গণমাধ্যমকে আগ থেকে জানানো হয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার প্রচারে নামার বিষয়টি তিনি নামার আগমুহূর্ত পর্যন্ত জানানো হয়নি। গতকাল বিকেল সোয়া চারটার দিকে হঠাৎ করেই গুলশানের বাসা থেকে বের হন তিনি। সেখান থেকে যান গুলশান-২ এ অবস্থিত পিংক সিটি মার্কেটে। মার্কেটের নিচতলায় কয়েকটি দোকানে গিয়ে ভোট চান খালেদা জিয়া। এসময় তাঁর সঙ্গে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ কয়েকজন মহিলা কর্মী আর নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা ছিলেন। খালেদা জিয়ার যাওয়ার খবরে ওই এলাকায় ভিড় জমে যায়। পুরো সময় জুড়ে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীদের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় পুলিশও নিয়োজিত ছিল।
প্রচারের সময় উত্তরের মেয়র পদপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন না। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বনানী তিন নম্বর ব্লকের ১১ নম্বর সড়কে গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন তাবিথ। পরে তিনি আবার চলে যান।
পিংক সিটি মার্কেট থেকে খালেদা জিয়া সরাসরি চলে যান গুলশান-১ নম্বরের ডিসিসি মার্কেটে। সেখান থেকে যান গুলশানের নাভানা টাওয়ারের নিচতলায়। এ দুটি মার্কেটে কয়েকটি দোকানে ঢুকে ভোট চান খালেদা জিয়া। অনেকের হাতে তাবিথের প্রচারপত্রও তুলে দেন। সেখান থেকে গুলশান লিংক রোড হয়ে উত্তর বাড্ডা প্রগতি স্মরণী হয়ে আমেরিকান দূতাবাসের পাশ দিয়ে গুলশান-২ নম্বর ডিসিসি মার্কেটে যান খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি গাড়ির ভেতরে ছিলেন। তাঁর গাড়িবহর ছিল খুব ধীর গতিতে। এ পথটুকু যেতে প্রায় এক ঘন্টা সময় লাগে। তাঁর গাড়ির পাশে শতাধিক নেতা-কর্মী মিছিল নিয়ে তাঁর সঙ্গে ছিলেন। নেতা-কর্মীরা সড়কের বাম পাশে থাকা মানুষের কাছে তাবিথ আউয়ালের প্রচারপত্র বিলি করেন। খালেদা জিয়া গাড়িতে বসেই হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ধীরগতিতে যাওয়ায় লম্বা যানজট তৈরি হয়।
সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার কিছু পরে খালেদা জিয়া পৌঁছান গুলশান-২ নম্বরে গুলশান ডিসিসি সুপার মার্কেটে। এখানে কয়েকটি দোকানে ঢুকে তিনি অনেকের কুশলও জানতে চান। একটি দোকানে ঢুকে তাবিথের পক্ষে ভোট চেয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহর অনেক নোংরা হয়ে গেছে। ঢাকাকে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন করতে হবে। সেখান থেকে খালেদা জিয়া যান বনানী সুপার মার্কেটে। মার্কেটের নিচতলায় গণসংযোগ করার পর বনানী এলাকায় গাড়িতে চড়ে গণসংযোগ করেন তিনি। সেখান থেকে যান মহাখালী। গাড়িতে বসেই মহাখালী ফুটপাতের পাশের দোকানি ও সাধারণ মানুষকে শুভেচ্ছা জানান খালেদা জিয়া। কর্মীরা এসময় প্রচারপত্র বিলি করেন। সেখান থেকে খালেদা জিয়া যান মহাখালী বাসটার্মিনালে। সেখানে খুব অল্প সময়ের জন্য গাড়ি থেকে নেমে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে তিনি যান তেজগাঁও এলাকায়। তেজগাঁও কলোনি বাজার এলাকায় খালেদা জিয়া পৌঁছালে ওইখানে অবস্থিত স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন।
সেখান থেকে খালেদা জিয়া যান হাতির ঝিলে। ওই এলাকায় আধা ঘণ্টার বেশি সময় জনসংযোগ করেন তিনি। দু’জায়গায় নিজে গাড়ি থেকে নামেন। সেখান থেকে সরাসরি বাসায় চলে যান বিএনপির চেয়ারপারসন।