‘ডেসটিনি স্টাইলে’ ব্যবসায় আল আমিনের ঝোলায় ২৬৮ কোটি টাকা
ডেসটিনির সাবেক কর্মী আল আমিন প্রধানের ইচ্ছে ছিল বিশ্বের সেরা ধনীদের কাতারে নাম লেখাবেন। ডেসটিনি স্টাইলে ব্যবসা করে ব্যাগেও পুরেছিলেন ২৬৮ কোটি টাকা। ধরা পড়ে গেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের হাতে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি জানান, এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস নামে একটি লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠান খুলে বহুস্তরভিত্তিক বিপণন ব্যবসা চালু করেছিলেন আল আমিন। এ বছরের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে প্রতিষ্ঠানটি ধোঁকা দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে ২৬৮ কোটি টাকা।
এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের (এমডি ও সিইও) আল আমিন ছাড়াও পুলিশ আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী কর্মকর্তা মো জসিম, ব্যবস্থাপক মো মানিক মিয়া, ব্যবস্থাপক মো তানভীর আহম্মদে, সহকারী ব্যবস্থাপক মো. পাভেল সরকার এবং অফিস সহকারী নাদিম মো. ইয়াসির উল্লাহ। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি হ্যারিয়ার গাড়ি, দুটি পিক আপ ভ্যান, সার্ভারে ব্যবহৃত ছয়টি ল্যাপটপ, দুটি রাউটার, দুটি পাসপোর্ট ও বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ডিসি মীর মোদাছছের হোসেন সংবাদ সম্মেলনে একটি উপস্থাপনায় দেখান কীভাবে মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার কাজটি করছিল প্রতিষ্ঠানটি। গুগল প্লে স্টোর থেকে প্রতিষ্ঠানটির অ্যাপ নামানো যেত। প্রতিষ্ঠানটির সদস্য হতে প্রত্যেককে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ১২ শ টাকা দিতে হতো।
এর বিনিময়ে তারা নামমাত্র কিছু পণ্য হাতে ধরিয়ে দিতেন। এসব পণ্যের মধ্যে ছিল অ্যালোভেরা শ্যাম্পু, ফেইসওয়াশ, চাল, ডাল ও মরিচের গুঁড়ো। গ্রাহক আরও তিনজনকে সদস্য করতে পারলে সেখান থেকেও কমিশন পেতেন। পুলিশ বলছে, অন্য যেকোনো এমএলএম ব্যবসার মতো এখানেই প্রথম দিকে গ্রাহকেরা লাভবান হচ্ছিলেন। দশমাসে প্রতিষ্ঠানটি ২২ লাখ ২৫ হাজার ব্যক্তিকে যুক্ত করতে সক্ষম হয়। এদের মধ্যে ১৭টি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশী সদস্য ছিলেন প্রায় ৫ লাখ।
পুলিশ বলছে, এ ধরনের ব্যবসা বাংলাদেশের আইনে নিষিদ্ধ। গ্রেপ্তারকৃতদের জিম্মা থেকে আটটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে। এই অ্যাকাউন্টের লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ।