মানহার বয়স মাত্র ১১ বছর। এই খুদে মেয়েটিই বড় একটি দায়িত্ব পালন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। সময়ের আগে কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া যমজ দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাইকে (মাহাদ) সে নিজেই হাসপাতালে ক্যাঙারু মাদার কেয়ার (কেএমসি) সেবাটা দিয়েছে। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পরও এ দায়িত্ব পালন করছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, নবজাতক যদি কোনো কারণে কম ওজনের হয় বা অসুস্থ থাকে, তাহলে মায়ের বুকে শিশুকে এমনভাবে শুইয়ে রাখতে হয়, যাতে দুজনের ত্বকে ত্বক লেগে থাকে। এটাই ‘ক্যাঙারু মাদার কেয়ার’। অস্ট্রেলিয়ার ক্যাঙারু যেমন নিজের পেটের নিচে একটি বিশেষ থলেতে বাচ্চা নিয়ে ঘুরে, সেই আদলেই কেএমসি সেবার ধারণাটা এসেছে।
মানহা রাজধানীর দোলাইরপাড় উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কেএমসি সেবাটা সাধারণত দেন মা। খালা, বাবা বা বড়রাও এ সেবাটা দেন। মানহার বয়সী এর আগে কেউ এ সেবা দিয়েছে, সে নজির নেই বললেই চলে।
মানহার যমজ দুই ভাইয়ের নাম মারজাদ আর মাহাদ। রাজধানীর বেসরকারি হাসপাতাল ডেলটা হেলথ কেয়ার যাত্রাবাড়ী লিমিটেডে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গত ১২ জানুয়ারি ওদের জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে এক মাস সাত দিন হাসপাতালে থাকতে হয়। ওদের জন্ম ওজন ছিল মাত্র ৮৫০ গ্রাম ও ৯৫০ গ্রাম।
এই হাসপাতালের নবজাতকদের জন্য আইসিইউর পরামর্শক চিকিৎসক মো. মুজিবুর রহমান বললেন, ‘মানহা তার মায়ের কষ্ট দেখে নিজে থেকেই আমার কাছে এসে জানতে চায় সে এটা পারবে কি না। তার উৎসাহ দেখে পুরো বিষয়টি বুঝিয়ে বলি। সে খুব ভালোভাবে তার দায়িত্ব পালন করেছে। এখনো ফলোআপে আসার সময় গাড়িতে কাপড় দিয়ে বুকের সঙ্গে ভাইকে জড়িয়েই হাসপাতালে আসে। গুগলে সার্চসহ বিভিন্নভাবে যে তথ্য পেয়েছি, তাতে এত কম বয়সে আর কেউ কেএমসি সেবা দিয়েছে, তার নজির কোনো দেশে আছে বলে জানতে পারিনি।