চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি, সিলেটের ধলাই নদে পানি বাড়ছে
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বৃষ্টিপ্রবণ চেরাপুঞ্জির পাদদেশ থেকে নেমে আসা ঢলের প্রভাবে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবাহমান ধলাই নদে পানি বাড়ছে। তবে সুরমা-কুশিয়ারাসহ সিলেটের অন্যান্য সীমান্ত নদ-নদীর পানি কমছে। আজ রোববার সকালে ও দুপুরে দৈনিক পানির স্তর পরিমাপ থেকে পাওয়া এ তথ্য জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।
পাউবো জানায়, সিলেটের সীমান্ত নদ-নদীর মধ্যে মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশ থেকে নেমে আসা ধলাই নদে আজ সকাল থেকে পানি বাড়ছে। কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর পয়েন্টে এ নদের পানির প্রবাহ পরিমাপ করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় সেখানে ৮ দশমিক ৮৪ মিটার উচ্চতা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ রোববার সকাল ৬টায় ৮ দশমিক ৯৬ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। সকাল ৯টায় ১ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে দুপুর ১২টায় ৮ দশমিক ৯৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ধলাই নদের ইসলামপুর পয়েন্টে পানির স্তর পরিমাপ শুরু করা হয় গত ২০ জুলাই থেকে। ওই দিন সেখানে পানির স্তর ১০ দশমিক ৬৯ মিটার থেকে বেড়ে ১১ দশমিক ৩০ মিটার ছিল। পরদিন ২১ জুলাই সর্বোচ্চ স্তর ছিল ১১ দশমিক ৬০ মিটার। তখন ধলাই অববাহিক এলাকা বন্যাকবলিত ছিল।
ধলাই নদের উৎসমুখ এলাকা ‘সাদা পাথর’ পর্যটনকেন্দ্র। সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি অঞ্চল লুংলংপুঞ্জি ও শিলংয়ের চেরাপুঞ্জি। বর্ষকালে সেখান থেকে একটি পাহাড়ি ঝরনা দিয়ে পানি নেমে আসে ধলাই নদে। গত মে মাস থেকে জুলাই পর্যন্ত তিন দফা পাহাড়ি ঢলে কোম্পানীগঞ্জে তিনটি বন্যা হয়েছে। তবে পাউবোর নদ-নদী পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, ওপারে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় নদে পানি বাড়লেও বন্যার শঙ্কা নেই।
ধলাই নদে পানি বাড়লেও পানি কমছে সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিত সারী ও লোভার। দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য অনুযায়ী, রোববার সকালে লোভা নদীর পানি লোভাছড়া পয়েন্টে ১২ দশমিক ৫৯ মিটার থেকে নেমে দুপুরে ১২ দশমিক ৫৫ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে সারী নদীর জৈন্তাপুরের সারীঘাট পয়েন্টে ৯ দশমিক ৩২ মিটার থেকে নেমে ৯ দশমিক ২৭ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
অন্যদিকে সিলেট অঞ্চলের দুই প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারার উৎসমুখে বৃষ্টিপাত ছাড়াই পানি বাড়ছিল। সেখানেও পানি কমছে। সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে আজ সকালে পানি ১১ দশমিক ৩৭ মিটার থেকে নেমে দুপুরে ১১ দশমিক ৩৫ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। সুরমার সিলেট শহর পয়েন্টে ৮ দশমিক ৯৫ মিটার থেকে নেমে ৮ দশমিক ৯৩ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়।
একই সময়ে কুশিয়ারার উৎসমুখ জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসিদ পয়েন্টে ১৪ দশমিক ২৪ মিটার থেকে নেমে ১৪ দশমিক ২১ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কুশিয়ারার মধ্যবর্তী ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। একটানা প্রায় ৩৭ দিন বিপৎসীমার ওপর থাকা ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে সকাল ৬টা ও সকাল ৯টায় ৯ দশমিক ২১ মিটারে স্থির ছিল পানি। দুপুর ১২টায় ১ সেন্টিমিটার কমেছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ মিটার।