চুয়াডাঙ্গায় ১০ প্রার্থীর কেউ রাজনীতিক নন
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে পাঁচজন করে মোট ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের কেউই পেশায় রাজনীতিক নন। একমাত্র নারী প্রার্থীসহ সাতজনেরই পেশা ব্যবসা। দুজন পেশায় আইনজীবী ও একজন শিক্ষক। শিক্ষকতা পেশার ওই প্রার্থীর হলফনামায় বার্ষিক কোনো আয় দেখানো হয়নি।
এ ছাড়া ব্যবসার পাশাপাশি সম্মানী-ভাতা, কৃষিকাজ, নিজ প্রতিষ্ঠানে চাকরি, ফ্ল্যাট, বাড়ি অথবা দোকানভাড়াকে আয়ের অন্যতম উৎস হিসেবে উল্লেখ করেছেন চারজন প্রার্থী। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থীদের দাখিল করা হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে (আলমডাঙ্গা ও সদরের একাংশ) এবারও নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার। পেশার বিবরণীতে তিনি ব্যবসার পাশাপাশি পারিতোষিক, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, কৃষি ও অন্যান্য উৎস লিখেছেন। আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবসা খাতে বার্ষিক ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, কৃষি খাতে ৩০ হাজার এবং পারিতোষিক ও ভাতাদি, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, ব্যাংক সুদ ও অপ্রদর্শিত আয় হিসেবে বার্ষিক আরও ৩৮ লাখ ৫৭ হাজার ২৯৩ টাকা উল্লেখ করেছেন।
এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. শরীফুজ্জামান শরীফ। তিনি পেশা হিসেবে লিখেছেন সংবাদপত্র প্রকাশনা ও ট্যুরিজম ব্যবসা। এসব খাতে তাঁর বার্ষিক আয় ছয় লাখ টাকা।
জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ও দলের জেলা কমিটির সভাপতি সোহরাব হোসেন পেশায় আইনজীবী। এ খাতে তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে হাতপাখা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম। হলফনামায় পেশার বিবরণীতে শিক্ষকতা উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে, আয়ের উৎসের কলামে শিক্ষকতাসহ সাতটি খাতের কোনোটিতেই আয় দেখানো হয়নি। সে হিসাবে তাঁর নিজের ও তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের বার্ষিক কোনো আয় নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জহুরুল ইসলাম তাঁর বার্ষিক আয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা উল্লেখ করে বলেন, ‘দলের সেক্রেটারি ফরম পূরণ করেছিলেন। কীভাবে এড়িয়ে গেছে বুঝতে পারছি না।’
একমাত্র নারী প্রার্থী বাংলাদেশ মুসলিম লীগ মনোনীত মেরিনা আক্তার পেশা হিসেবে ‘স্বামীর ব্যবসা’ দেখিয়েছেন। হারিকেন প্রতীকের এই প্রার্থী তাঁর বার্ষিক আয় উল্লেখ করেছেন দুই লাখ টাকা।
চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে (দামুড়হুদা, জীবননগর ও সদরের একাংশ) জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাংসদ আলী আজগার এবারও নৌকা নিয়ে লড়ছেন। পেশার বিবরণীতে লিখেছেন ব্যবসা। এ খাতে তাঁর বার্ষিক আয় ৩৯ লাখ ৪৯ হাজার ৬৯৬ টাকা। এ ছাড়া কৃষি খাতে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ২৭০ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া ৯৩ হাজার টাকা, চাকরি খাতে ৯ লাখ ৯০ হাজার, ব্যাংক সুদ ২৩ হাজার ৭৫৪, সাংসদ হিসেবে সম্মানী ও অন্যান্য ভাতা ২৩ লাখ ৮৭ হাজার ৯১৪ টাকা তাঁর আয়। একই আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক বিজিএমইএর সহসভাপতি মাহমুদ হাসান খান। পেশার বিবরণীতে তিনি উল্লেখ করেছেন ব্যবসা ও শিল্প উদ্যোক্তা। এ খাতে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩ টাকা। এ ছাড়া বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান ও অন্যান্য ভাড়া বাবদ ১ কোটি ১৩ লাখ ৮১ হাজার ১২৭ টাকা, কৃষি খাতে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৪০০ টাকা ও সম্মানী ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছেন তিনি।
এ আসনে গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জাকের পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আবদুল লতিফ খান। তাঁর পেশা ব্যবসা। এ খাতে তাঁর বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে অংশ নেওয়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মো. হাসানুজ্জামানেরও পেশা ব্যবসা।