গাজীপুরের ক্যানসার আক্রান্ত সজীবের বেঁচে থাকার আকুলতা
স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ভালোই ছিলেন সজীব মিয়া। জমিজমাও ছিল। তবে মরণব্যাধি ক্যানসার ২৫ বছর বয়সী এই যুবকের জীবনের সব হাসি-আনন্দ কেড়ে নিচ্ছে। বেঁচে থাকার আকুলতা নিয়ে এখন ছটফট করেন তিনি।
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের কোষাদিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সজীব মিয়া। এক বছর আগে ২০১৭ সালে শরীরে ক্যানসার ধরা পড়লে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছেন তিনি। চিকিৎসার খরচ চালাতে গিয়ে পৈতৃক সম্পত্তির সবটুকুই বিক্রি করে দিতে হয়েছে সজীব মিয়াকে। সর্বস্বান্ত হয়ে বাবা, স্ত্রী ও দুই বছর বয়সী একমাত্র ছেলেকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন উপজেলার সাতখামাইর এলাকার খাসজমিতে। এখানেই ছোট্ট দোকানে চা বিক্রি করেন সজীবের বাবা নজরুল ইসলাম। বর্তমানে তাঁর পুরো পরিবারের এতটাই দৈন্যদশা যে ক্যানসারের চিকিৎসা তো দূরের কথা, নিজের খাবার জোগাড় করতে হচ্ছে চেয়েচিন্তে। খাবার কিনে টাকা বাঁচলে কেবল ব্যথার ওষুধ কিনে খান সজীব।
সজীবের স্বজনেরা জানান, অসুস্থ হওয়ার আগে সজীব কাঠ চেরাই মিলে চাকরি করতেন। কিছুদিনের মধ্যে চাকরি হারাতে হয় তাঁকে। পরবর্তী সময়ে একটা নছিমন কিনে সংসারের চাকাটা ঘোরানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। ঠিক সেই মুহূর্তেই ক্যানসারে আক্রান্ত হন সজীব।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সজীবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জীর্ণশীর্ণ ঘরের বারান্দায় পা ছড়িয়ে দিয়ে শুয়ে আছেন তিনি। তাঁর কোমরের নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশ অনেক ফোলা। ভাঙা গলায় সজীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বাঁচতে চাই। কত মানুষই তো ক্যানসার হলে বেঁচে যায়। আমি মরলে আমার ছোট সন্তান, স্ত্রী অসহায় হয়ে যাবে। আমার ছেলেরে ছাড়া আমি থাকব ক্যামনে?’
সজীবের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, মহাখালীর ক্যানসার হাসপাতালের সার্জিক্যাল অনকোলোজি চিকিৎসক বলরাম কুমার সাহা তাঁর ছেলেকে ১২টি কেমোথেরাপি দিতে হবে বলে জানিয়েছেন। এ জন্য কম করে হলেও ১০ লাখ টাকা লাগবে। কিন্তু তাঁদের কাছে এত টাকা নেই। ছেলের চিকিৎসা করতে না পারার অসহায়ত্ব তাঁকে কুরে কুরে খায় প্রতিনিয়ত।