২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

‘ক্রসফায়ারের’ গল্পগুলোর ভেতরে সত্যতা নেই

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান
ফাইল ছবি

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। অন্ততপক্ষে একটা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা দেখতে পেলাম। এটা একটা স্বস্তির ব্যাপার।

তবে একই সঙ্গে আমাদের এটা দেখিয়ে দিল যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘ক্রসফায়ার’, ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বা ‘এনকাউন্টারের’ নামে যে গল্পগুলো এত দিন বলে আসছিল, সেই গল্পগুলোর ভেতরে সত্যতা নেই। মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায়ের মাধ্যমে সত্যটি আবার বেরিয়ে এসেছে।

যত মানুষ এমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, হোক সে মাদক ব্যবসায়ী, ধর্ষক বা কালোবাজারি, তারা বিচার পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন এ কথা স্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়ে গেল। এর দায় রাষ্ট্রের ওপর বর্তায়।

আরও পড়ুন

রাষ্ট্র এই দায় অন্য কোনো কথা বলে বা বিবৃতি দিয়ে এড়াতে পারে না। এখন যেটি হলো, আমার মনে হয়, রাষ্ট্রের ওপর চাপ বেড়ে গেল। এ রকম হত্যাকাণ্ড ভবিষ্যতে যেন না ঘটে। মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা যেন বন্ধ করে রাষ্ট্র।

দেশে বিচারহীনতার একটা অপসংস্কৃতি যে গড়ে উঠছিল, আমি আশা করেছিলাম মেজর সিনহা হত্যার পর সেটি বন্ধ হয়ে যাবে। কিছুদিন চুপচাপ ছিল, পরে আবার শুরু হয়েছে। কিন্তু অতি সম্প্রতি যেহেতু আন্তর্জাতিকভাবে নানা প্রশ্ন উঠছে, এরপর আমরা একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছি, একটা শঙ্কাজনক অবস্থায় পড়েছি। যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

আরও পড়ুন

এরপর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একজন সদস্য যেভাবে তথ্যগুলো উপস্থাপন করছেন, বিষয়টি একটা রাষ্ট্রের জন্য স্বস্তিকর নয়। নাগরিক হিসেবে আমরা লজ্জার মধ্যে পড়ি। আমরা বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক হতে চাই। সেই গর্বের জায়গাটা এভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে না।

বিদেশে আমাদের ব্যাপারে যে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে, সেটিকে সামাল দিতে হলে রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে হবে না। সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।

আরও পড়ুন

যেসব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, অন্ততপক্ষে সাম্প্রতিককালে যেগুলো হয়েছে, সেগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত করে সব তথ্য জনগণের সামনে উন্মোচন করা দরকার।

আরও পড়ুন

আইনের নামে আইন লঙ্ঘনের কোনো কর্মকাণ্ডে যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্য জড়িত না থাকে, সেই জায়গাটি পাকাপোক্ত করতে হবে।

আরও পড়ুন

অধ্যাপক মিজানুর রহমান: সাবেক চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।