২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

এখনো ঝুলছে প্রচারসামগ্রী

>

নির্বাচন শেষ হয়েছে ছয় দিন। কিন্তু গাজীপুর শহরের বিভিন্ন  এলাকায় এখনো রয়ে গেছে নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী। গতকাল গাজীপুরের এরশাদনগরের বড়বাজার এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
নির্বাচন শেষ হয়েছে ছয় দিন। কিন্তু গাজীপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় এখনো রয়ে গেছে নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী। গতকাল গাজীপুরের এরশাদনগরের বড়বাজার এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে ছয় দিন। কিন্তু এখনো সরেনি নির্বাচনী ব্যানার–পোস্টার।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে গত ৩০ ডিসেম্বর। কিন্তু এখনো গাজীপুর শহরের রাস্তাঘাট, অলিগলি, দোকানপাট, স্কুল ও কলেজের সামনে ঝুলছে নির্বাচনী ব্যনার–পোস্টার। এদিকে ঢাকার সাভারের বিভিন্ন এলাকা থেকেও এখনো নির্বাচনী পোস্টার ও ব্যানার অপসারণ করা হয়নি।

গতকাল শনিবার দুপুরে গাজীপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যানার–পোস্টারে ছেয়ে আছে পুরো এলাকা। এর মধ্যে টঙ্গী বাজার, আনারকলি রোড, সেনাকল্যাণ রোড, বউবাজার সড়ক, মনসুর আলী রোড, শেরেবাংলা সড়ক, টঙ্গী কলেজ এলাকা, আউচপাড়া, মধ্য আউচপাড়া, শফিউদ্দিন সড়ক, বাসন সড়ক, বনমালা রোড, কুনিয়া তারগাছ এলাকা, মেম্বারবাড়ি সড়ক, ফাইসন্স সড়ক ও পৌর মার্কেটের সামনে থেকে মোশারফ টাওয়ার, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ রোড, এরশাদনগর বড় বাজার ও বোর্ড বাজার এলাকা পর্যন্ত ব্যানার–পোস্টার সবচেয়ে বেশি। কোথাও পোস্টার ছিঁড়ে গেছে, শুধু রশি ঝুলে আছে। আবার কোথাও পোস্টার মাটিতে পড়ে আছে।

নগরের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বারবাড়ি সড়কে যত দূর চোখ যায় শুধু পোস্টার। কয়েক জায়গায় রশি ঢিল হয়ে মাটি ছুঁয়ে গেছে পোস্টার। স্থানীয় এক দোকানি জানান, পোস্টারগুলো সরাতে এখন পর্যন্ত কোনো লোক আসেননি। এমনকি কেউ নিজ থেকে সরাতে চাইলেও বিভিন্ন ধরনের জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানি বলেন, ‘কিছু পোস্টার আমার দোকানের দরজার সামনে ঝুইলা ছিল। এই জন্য গত বৃহস্পতিবার আমি নিজেই পোস্টারগুলো একটু সরাই ছিলাম। এ জন্য স্থানীয় কয়েকজন আইসা আমারে বিভিন্ন কথা শুনাইছে।’

একই ধরনের কথা বললেন টঙ্গী বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. মেরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, পোস্টারগুলো সিটি করপোরেশন থেকেও পরিষ্কার করা হচ্ছে না, আবার নিজেরা পরিষ্কার করতে গেলেও ঝামেলা। দলীয় কোনো লোক দেখলে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেন।

টঙ্গী সরকারি কলেজ–সংলগ্ন এলাকার এক দোকানি বলেন, পোস্টারগুলো এলোমেলোভাবে পড়ে থাকায় রাস্তাঘাট অপরিষ্কার মনে হয়।

জানা গেছে, নির্বাচনের প্রচারসামগ্রী অপসারণের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অনেক এলাকায় কাজও শুরু হয়েছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, তিনি ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা পেয়েছেন। সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। রোববার (আজ) থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।

এদিকে ঢাকার সাভারের বিভিন্ন হাটবাজার, পাড়া-মহল্লাসহ অলিগলিতে এখনো নির্বাচনী পোস্টার আর ব্যানার ঝুলছে।

উপজেলা প্রশাসন বলছে, নির্বাচনের পর অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদেরই এসব পোস্টার সরিয়ে ফেলার কথা।

গত তিন দিন পৌর এলাকার বাজার রোড, উত্তর পাড়া, কামাল রোড, রেডিও কলোনি, ব্যাংক কলোনি, ব্যাংক টাউন, থানা রোড, গেন্ডা, ইমান্দিপুর, আশুলিয়ার জিরাবো, পলাশবাড়ি, বাইপাইল, কলমা, নয়ারহাটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পোস্টার ও ব্যানার ঝুলতে দেখা যায়।

গতকাল সাভার উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়েও পোস্টার ও ব্যানার দেখা যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের আশপাশেই আছে অনেক পোস্টার ও ব্যানার।

সাভার বাজার রোডের এক ব্যবসায়ী বলেন, নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে যেসব পোস্টার ও ব্যানার ঝোলানো হয়েছে, তা অপসারণে কারও মাথাব্যথা নেই। এসব পোস্টার ও ব্যানারের কারণে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।

পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনির বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, এসব পোস্টার ও ব্যানারের প্রায় সবই সরকারি দলের প্রার্থী এনামুর রহমানের। তাই স্থানীয় ব্যক্তিরা তা অপসারণে ভয় পান।

জানতে চাইলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাসেল হাসান বলেন, নির্বাচনের পর অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদেরই নিজ দায়িত্বে এসব পোস্টার সরিয়ে ফেলার কথা। কিন্তু গত ছয় দিনেও তা অপসারণ না করায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে, যাতে দ্রুত এসব পোস্টার ও ব্যানার অপসারণ করা হয়।