‘এখন বলার বাকি, তেলের বদলে পানি খান, তেলের ওপর চাপ কমান!’ এটি দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের নতুন নাম নির্ধারণ নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের নিচে করা পাঠকের একটি মন্তব্য। এই প্রতিবেদনের নিচে অনেক পাঠকই মন্তব্য করেছেন। সেখান থেকে নির্বাচিত কিছু মন্তব্য এখানে তুলে ধরা হলো।
বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম একলাফে ৩৮ টাকা বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে গতকাল বৃহস্পতিবার। ঘোষণা অনুযায়ী বোতলজাত ১৬০ টাকার সয়াবিন তেল কিনতে হবে ১৯৮ টাকা দামে। প্রায় একই হারে দাম বেড়েছে খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের। এ নিয়ে অন্যান্য গণমাধ্যমের মতো প্রথম আলো অনলাইনেও গতকাল বৃহস্পতিবার খবর প্রকাশিত হয়েছে।
‘সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৩৮ টাকা বাড়ছে’ শীর্ষক প্রকাশিত ওই নিউজে শিরোনামের মন্তব্যটি যে পাঠক করেছেন, তিনি নিজের নাম প্রকাশ করেননি। সেখানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক পাঠক লিখেছেন, ‘ শুধু সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি নয়, পুতিনের ইউক্রেন আগ্রাসন বিশ্বকে আরও অনেক ভোগান্তিতে ফেলবে।’
নাম প্রকাশ না করে আরেক পাঠক লিখেছেন, ‘১৯৮ টাকা না করে একেবারে ৯৯৮ করে ফেলুক। আদিম মানুষের মতন মাছ, মাংস পুড়িয়ে খেতে শুরু করি!! তা–ও পারবেন না। কারণ, গ্যাসের দাম। অপেক্ষা করেন।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘২ রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরিটা না করিয়েই ইনিংস ঘোষণা করে দিলেন—আপনারা খুবই স্বার্থপর।’
মো. আবদুর রহমান নামের এক পাঠক লিখেছেন, ‘যাঁরা তেলের দাম ৩০ টাকা বাড়াটাকেই শুধু দেখছেন, তাঁরা তেল ব্যবসায়ী আর সরকারের খাটনিটা দেখছেন না। তাঁরা বলছেন, কী দরকার ছিল ২ টাকা কম নেওয়ার, ২০০ নিলেই তো চলে। চলে, কিন্তু ভায়া, জনগণের পকেট থেকে ২টা টাকা যাতে বেশি না যায়, সে জন্য সরকার আর তেল ব্যবসায়ীরা না জানি কত মাথা খাটাইছে! সেইটা তো একটু ভাববেন!’
মো. মিজানুর রহমান নামের এক পাঠক লিখেছেন, ‘শুধু একটা কথাই বলব, দেশের মানুষের সেবা করতে এসে মানুষকে কষ্ট দিয়ো না। সব জিনিসের দাম বাড়তি, মানুষের কোনো কর্ম নাই। শ্রমজীবী গার্মেন্টসশ্রমিক আর প্রবাসী শ্রমিকদের আয়ের ওপর দেশের অর্থনীতি টিকে আছে। রাষ্ট্রের অনেক অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে। তা না হলে শুধু জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না।’
নাম প্রকাশ না করে আরেক পাঠক লিখেছেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয় কী করছে? সয়াবিন তেলের বিকল্প আনছে না কেন? ’ উষ্মা প্রকাশ করে পাঠক বাপ্পি তালুকদার লিখেছেন, ‘বাহ! খুব ভালো খবর।’
নাম প্রকাশ না করে এক পাঠক লিখেছেন, ‘৩০০ টাকা কেজি করলেও কেউ কিছু বলবে না। চালিয়ে যান বাবারা।’ লাবণ্য সরকার নামের একজন ইংরেজিতে যা লিখেছেন, তার অনুবাদ এমন, ‘যেখানে সরকারকে বিভিন্ন লোক ও সংগঠন দিনরাত তেল মারে, সেখানে কেন সরকারের তেলের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়ে।’ হেনরি কৌশিক প্রামাণিক বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে কি বাংলাদেশের তেলের দাম কমবে?’
মধুসূদন অধিকারী নামের এক পাঠক লিখেছেন, ‘কম হয়ে গেল না! আরেকটু বাড়ালে আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতো।’ একজন লিখেছেন, ‘সরকারের সহযোগিতায় ব্যবসায়ীরা দেশটাকে লুটে খাচ্ছে।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘সয়াবিন তেলের দাম ২০০ থেকে ২২০ টাকা ঈদের ১ সপ্তাহ আগে থেকে। এসব দাম নির্ধারণ না করে প্রতিদিন বাজারে তদারকির ব্যবস্থা করা উচিত।’
ফিরোজ আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, ‘সরকার কি জনগণের নাকি ব্যবসায়ীদের?’ হেদায়েত উল্লাহ লিখেছেন, ‘ঈদের আগে বাজারে ভোজ্যতেল উধাও হওয়ায় বোঝা যাচ্ছিল, একটা কিছু ঘটবে। আমাদের রক্ষার কেউ নেই।’ নাম প্রকাশ না করে এক পাঠক লিখেছেন, ‘সরকারি ভর্তুকি দেওয়া যেতে পারত, লস প্রজেক্টে ঠিকই সরকার ভর্তুকি দিয়ে দুর্নীতিবাজ আমলাদের পেট ভরাচ্ছে আর যখন জনগণের ভর্তুকির প্রয়োজন, তখন তাদের ঘাড়েই অতিরিক্ত মূল্য চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’