তফসিল বাতিলের দাবির প্রতিবাদ ৩৮৫ সাবেক সরকারি কর্মকর্তার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। সেই বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ৩৮৫ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা।
আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে সাবেক শিক্ষাবিদ, আমলা, চিকিৎসক এবং সেনা, নৌ, বিমানবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আছেন।
৩৮৫ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবিতে ১৪১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার বিবৃতিটি তাঁদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ওই বিবৃতির বিষয়টি বস্তুনিষ্ঠ নয়। যেসব তথ্য-উপাত্ত উল্লেখ করা হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অসত্য ও বিভ্রান্তিকর।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার আগে কমিশনের সব স্টেকহোল্ডারের (অংশীজন) সঙ্গে বহুবার আলোচনা করেছে এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য একাধিকবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও সমমনা দলগুলো কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেনি। এমনকি তাদের কমিশন থেকে পৃথকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা সে আলোচনায় সাড়া দেয়নি, যা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আলোচনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও বহুবার তাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু তারা (বিএনপি ও সমমনা দল) তাতে কর্ণপাত না করে সরকারের পদত্যাগের জন্য আন্দোলনের নাশকতা করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঘোষিত তফসিল কমিশনের সঙ্গে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের জন্য প্রযোজ্য এবং উন্মুক্ত। তাহলে কীভাবে এই তফসিল একতরফা হয় এবং কীভাবে অবসরপ্রাপ্ত কিছু সরকারি কর্মকর্তা কমিশনের সংবিধানসম্মত তফসিলকে একতরফা তফসিল হিসেবে আখ্যায়িত করে তা বাতিলের জন্য সুপারিশ করেন, তা সর্বসাধারণের কাছে বোধগম্য নয়। এই প্রয়াস বাংলাদেশকে একটি সাংবিধানিক শূন্যতার দিকে ঠেলে দেওয়ার নামান্তর।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে আছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা, এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ, সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, সাবেক সচিব সেলিনা আফরোজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য কামরুল হাসান খান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মুস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল মান্নান চৌধুরী, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম এ মান্নান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য রাশিদ আসকারী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হারুন-অর-রশিদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাবেক মহাসচিব ইকবাল আর্সলান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোল্লা ফজলে আকবর, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবদুল ওয়াদুদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সাব্বির আহমেদ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) সাদে উদ্দিন আহমেদ, রিয়ার এডমিরাল (অব.) এ কে এম আজাদ, অধ্যাপক মনোয়ার হোসাইন, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, অধ্যাপক বরেণ চক্রবর্তী, সাবেক সচিব এম এ কাদের সরকার, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।