চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৬ দাবি

করিচ্যুত বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনেছবি: প্রথম আলো

স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে নির্দোষ প্রমাণিত সব বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহাল এবং তাঁদের ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করাসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাঁদের স্বজনেরা। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলনে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাঁদের স্বজনদের পক্ষে তাঁদের দাবিগুলো তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মহিন সরকার। তিনি বলেন, ‘যেসব নির্দোষ বিডিআর সদস্য বছরের পর বছর অন্যায়ভাবে নির্যাতিত হয়েছেন তাঁদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমরা চাই দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের বাংলাদেশে বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন থাকুক। পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও এর বিচার ছিল ফ্যাসিবাদী শক্তির সাজানো নাটক।’

চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাঁদের স্বজনদের ছয় দাবি হলো— শেখ হাসিনা সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক মামলার রায় বাতিল করে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে ‘ঢালাওভাবে’ আটককৃত বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে; পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ‘ব্যতীত’ শব্দ ও কার্যপরিধি ২–এর (ঙ) নম্বর ধারা বাদ দিতে হবে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ও ষড়যন্ত্রের শিকার (কারাবন্দী কিন্তু বাইরে আছেন) দেশপ্রেমিক বিডিআর সদস্যদের কমিশনে যুক্ত করতে হবে; পিলখানার ভেতরে এবং বাইরে শহীদ হওয়া ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে কারাগারে মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে; স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে নির্দোষ প্রমাণিত সব বিডিআর সদস্যকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে; বিজিবি আইন ২০১০ বাতিল করে পূর্বের বিডিআর আইন পুনর্বহাল করতে হবে। ২৪–এর গণঅভ্যুত্থানে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করা বিজিবির নামকে পরিবর্তন করে বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে; পিলখানার ভেতরে ও বাইরে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস চালু করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী পারভেজ হোসেন বলেন, যেহেতু এ ঘটনার পুনর্তদন্ত হচ্ছে তাই ধরে নিতেই হয় মহামান্য হাইকোর্ট ও সরকারপক্ষ বিশ্বাস করেছে আগে তদন্তটি সঠিকভাবে হয়নি। এর মধ্য দিয়ে আগের তদন্তের বৈধতা হারায়। তাই এ তদন্তে যেসব নির্দোষ সদস্য অভিযুক্ত ও কারাবন্দী আছেন তাদের সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অথবা ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১ ধারা ব্যবহার করে তথাকথিত এই দ্বণ্ডটি স্থগিত করতে হবে। যদি নতুন তদন্তে তারা অভিযুক্ত হন তাহলে তারা বিচারের মুখোমুখি হবেন। কিন্তু যাঁরা অভিযুক্ত নন তাঁদের এখনো কারাবন্দী করে রাখাটা অমানবিক।