গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় শনাক্তকরণ রোধে নীতিমালা অনুসরণ করতে নির্দেশ
গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় শনাক্তকরণ রোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদিত নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রায় দেন। গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় শনাক্তকরণের পরীক্ষা বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে চার বছর আগে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান ২০২০ সালে ওই রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দেন। গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় শনাক্তকরণ রোধে নীতিমালা বা নির্দেশনা প্রণয়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়।
রুলের পর নীতিমালার জন্য ১৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। তারা ‘ন্যাশনাল গাইডলাইন রিগার্ডিং প্যারেন্টাল জেন্ডার সিলেকশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক নীতিমালা তৈরি করে। ওই নীতিমালা গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুমোদন দেয়। সম্প্রতি নীতিমালাটি আদালতে দাখিল করা হয়। শুনানি নিয়ে রুল নিষ্পত্তি করে আজ রায় দেওয়া হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান নিজেই শুনানি করেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তীর্থ সলিল পাল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
রায়ের পর আইনজীবী তীর্থ সলিল পাল প্রথম আলোকে বলেন, গর্ভের শিশুর লিঙ্গ শনাক্তকরণ পরীক্ষা করতে পারে—এমন কোনো ব্যক্তি ও চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান আকারে, ইঙ্গিতে, ছবি, চিহ্ন প্রকাশ, বিজ্ঞাপনসহ কোনো মাধ্যমে—এ বিষয়ে তাদের সক্ষমতার কথা প্রকাশ করতে পারবে না। তবে গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয় শনাক্তকরণ পরীক্ষার সক্ষমতা যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির রয়েছে, তারা এ–সংক্রান্ত তথ্যাদি ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) সংরক্ষণ করবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে। চিকিৎসার উদ্দেশ্য ছাড়া গর্ভের শিশুর লিঙ্গপরিচয়ে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে নীতিমালায়। নীতিমালায় যা রয়েছে, তা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেওয়া হয়েছে।
এই রায়ের ফলে কোনো হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ল্যাবরেটরি মৌখিক, রিপোর্ট, চিহ্নসহ কোনো মাধ্যমে অনাগত শিশুর লিঙ্গপরিচয় প্রকাশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শিশুদের যেসব পরীক্ষা হয়, যেখানে পরিচয় প্রকাশের সুযোগ আছে, তা ডেটাবেজ আকারে সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি চলমান তদারকিতে থাকবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।