পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন

পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। ঢাকা, ১৪ জানুয়ারিছবি: প্রথম আলো

নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের পেছনের প্রচ্ছদ থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। এ সময় পাঠ্যবইয়ে আদিবাসী শব্দ পুনর্বহালের দাবি জানান তাঁরা।

মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। ‘‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আদিবাসী’ শিক্ষার্থীবৃন্দের’’ ব্যানারে এই মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সুদীপ্ত চাকমা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্যে যে অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ছিল তা আজ পুরোপুরি ব্যর্থ। বাংলাদেশের সব সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের ‘আদিবাসীদের’ দাবিকে বারবার উপেক্ষা করেছে।

সুদীপ্ত চাকমা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ‘আদিবাসীদের’ অধিকারকে যথোপযুক্তভাবে সম্পৃক্ত করে এই রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক পাঠ্যবই থেকে আদিবাসী শব্দ পুনর্বহাল করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে যে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।

আরও পড়ুন

মানববন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (জেএসএস–সমর্থিত) সাধারণ সম্পাদক অন্বেষ চাকমা বলেন, ‘এই গ্রাফিতির বিরুদ্ধে যারা মিথ্যাচার করছে তারা জুলাই অভ্যুত্থান ও অসাম্প্রদায়িক বৈষম্যহীন বাংলাদেশের চেতনাকে ধারণ করে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে এসেও আজ আমাদের ভূমি অধিকারের দাবি, আমাদের অস্তিত্বের দাবি নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। দ্রুত চট্টগ্রামের স্থায়ী রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।’

বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের সভাপতি উসাচিং মারমা বলেন, ‘আমরা আদিবাসীরা এ দেশের নাগরিক। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের বাদ দিয়ে এই রাষ্ট্র পরিপূর্ণতা অর্জন করতে পারে না। এনসিটিবি কর্তৃক পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী প্রচ্ছদ বাতিলের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী নই, আমরা সম্পৃক্ততাবাদী। সবার নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করে সুষ্ঠু ও অসাম্প্রদায়িক বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হোক।’

আরও পড়ুন

এ সময় ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের সভাপতি বিলাস ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরাও এ দেশের নাগরিক। গুটিকয় কিছু সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর প্রতিবাদে এনসিটিবি কর্তৃক আদিবাসী গ্রাফিতি বাতিল একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের পরিচায়ক হতে পারে না। অনতিবিলম্বে আদিবাসী গ্রাফিতি পুনর্বহাল রেখে সব জাতি মিলে একটি সম্পৃক্ত ও সুষ্ঠু নাগরিক মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করতে হবে।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চাকমা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।