বাংলাদেশ নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্ন
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখায় বিশ্বাসী যুক্তরাষ্ট্র: ম্যাথু মিলার
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সম্মানে বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের আগের সরকারের মতো বর্তমান সরকারকেও বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সময় মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ম্যাথু মিলার।
ম্যাথু মিলারকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে ৩০ জনের বেশি সাংবাদিককে কোনো শুনানি বা জামিন ছাড়াই দুই মাসের বেশি সময় ধরে কারাগারে আটকে রাখ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) ছাড়াও অনেক মানাবাধিকার সংগঠন (প্রধান উপদেষ্টা) ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন। তাতে (ঢাকায় নিযুক্ত) ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূতেরাও স্বাক্ষর করেছেন। তাঁদের (গ্রেপ্তার সংবাদিকদের) যেন অন্তত জামিন দেওয়া হয়, সে বিষয়ে আপনি কি কোনো বক্তব্য দেবেন? কারণ, তাঁরা কারাগারে আছেন এবং প্রকৃতপক্ষে তাঁরা কারাকক্ষে বন্দী রয়েছেন।
জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে স্পষ্ট করে বলেছি, যেমনটি আগের সরকারকে স্পষ্ট করে বলেছি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান জানানোয় আমরা বিশ্বাস করি। এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আইনের শাসন ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সম্মানের বিষয়টির সংগতি রাখা উচিত।’
ম্যাথু মিলারের কাছে ওই সাংবাদিক আরও প্রশ্ন করেন, সম্প্রতি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের (সরকারের) একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টা, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে দাঁড়িয়ে যাঁকে শেখ হাসিনার সরকার পতনের ক্ষেত্রে ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল, সেই উপদেষ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কিত এক পোস্টে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামসহ ভারতের অংশবিশেষে বাংলাদেশের সীমানা বাড়ানোর পক্ষে কথা বলেছেন। এ ধরনের মন্তব্য দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এই ব্যক্তি ড. ইউনূসের খুবই ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাঁর এ ধরনের মন্তব্যকে কি যুক্তরাষ্ট্র সরকার উদ্বেগের বিষয় হিসেবে দেখছে এবং অঞ্চলটিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি, এ ধরনের কোনো মন্তব্যের বিষয়ে আমি অবগত নই। আপনার কাছ থেকে শোনা ছাড়া এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এ ক্ষেত্রে আমি এখন একটা সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করব। যেহেতু আমি এ ধরনের মন্তব্য দেখিনি, তাই এ মুহূর্তে আমি বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিষিদ্ধ করার বিষয়টি উল্লেখ করে ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যা সাংবিধানিক অধিকারের লঙ্ঘন ও বাক্স্বাধীনতা দমন। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
এ প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’