বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের ২৩তম উৎসবে ঢাকা আঞ্চলিক পর্বে বিজয়ী ৪২৫ জন লড়বে জাতীয় পর্বে। আজ মঙ্গলবার তাদের হাতে মেডেল ও টি–শার্ট তুলে দেওয়া হয়েছে। এ সময় সামনের দিনে গণিতের ভূমিকা ও জীবনে গণিতের প্রয়োজনীয়তা শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন অতিথিরা।
মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটে আজ এ অনুষ্ঠান হয়। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান সামনে রেখে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি কর্তৃক আয়োজিত ‘ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০২৫’–এর ঢাকা আঞ্চলিক উৎসবের পরীক্ষা পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ২৪ জানুয়ারি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হক গণিতের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কবিতা, সাহিত্য পড়ার আহ্বান জানান। কবিতার মাধ্যমে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের গণিতের কিছু অনুশলীনও তিনি করান।
বিজয়ী হওয়ার চেয়েও এ ধরনের উৎসবে অংশগ্রহণই জীবনকে অনেক এগিয়ে দেবে বলে জানান মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক জিনাত ফারহানা।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির কোষাধক্ষ্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন এ ধরনের উৎসবে শিশুদের নিয়ে আসার জন্য অভিভাবকদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, যারা গণিতে ভালো এবং এ ধরনের অলিম্পিয়াডে অংশ নেয়, তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় ভালো করে। গণিত ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সদস্য এবং টালি খাতার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহাদাত উল্লাহ খান বলেন, গণিত পারলে সব পারা যায়। এই বিজয়ীরা সবই পারবে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং প্রথম আলো ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়কারী মুনির হাসান বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টামের মতো বিষয় নিয়ে যারা কাজ করবে, তাদের গণিত জানতে হবে। সামনের দিন হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। অর্থাৎ গণিতে যারা ভালো করবে, তারাই নেতৃত্ব দেবে।
একাডেমিক কাউন্সিলর জাহিদ হোসাইন খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রিজওয়ানা রিয়াজ, অ্যাসোসিয়েশন ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট–এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অধ্যাপক ফারজানা আলম এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সকাল রায়।
অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী মেহরাব এবং ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার মেঘা খেতান ও অনিক সরকার। এ ছাড়া অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে ছিল গণিত ও বিজ্ঞানের বইয়ের মেলা।
উল্লেখ্য, চলতি বছর জুলাই মাসে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় ৬৬তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ দল নির্বাচন করা হবে। এ লক্ষ্যে সারা দেশ থেকে অনলাইনে প্রায় ৭৫ হাজার ৫৯৬ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে। নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রথমে ‘অনলাইন বাছাই অলিম্পিয়াড’ অনুষ্ঠিত হয় এবং বাছাই অলিম্পিয়াডের বিজয়ীদের নিয়ে এখন ১৫টি শহরে ‘আঞ্চলিক গণিত উৎসব’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই ১৫টি আঞ্চলিক গণিত উৎসবের বিজয়ীদের নিয়ে আগামী ৭–৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় গণিত উৎসব ২০২৫।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এ উত্সবের আয়োজন করেছে।