হিরো আলমকে নিয়ে টুইট: জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে তলব করে বাংলাদেশের অসন্তোষ
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেনের (হিরো আলম) ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকায় জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সমন্বয়কারী শেলডন ইয়েটকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শেলডন ইয়েটকে তলব করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আসাদ আলম সিয়াম। এসময় অসন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘ যেন প্রকাশ্যে এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে—সরকারের এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
গোয়েন লুইস এই মুহূর্তে বাংলাদেশে না থাকায় বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করছেন। পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন আজ বিকেলে তাঁকে তলবের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বার্তা তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’ তবে কোন বার্তা জাতিসংঘের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে গোয়েন লুইসের টুইট ভালোভাবে নেয়নি সরকার। বিশেষ করে নির্বাচন ঘিরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যখন বাংলাদেশকে নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা হচ্ছে, তখন উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র একজন প্রার্থীকে নিয়ে প্রকাশ্যে এভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো নাক গলানোর শামিল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ বার্তা জাতিসংঘের প্রতিনিধিকে তলব করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই কর্মকর্তারা আরও বলেন, বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এভাবে আচরণ করে কি না, তা শেলডন ইয়েটকে তলব করে জানতে চাওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য থেকে জাতিসংঘ বিরত থাকবে—বাংলাদেশ সরকারের এমন প্রত্যাশার কথাও তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে তলবের বিষয়ে জানতে জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সমন্বয়কারী শেলডন ইয়েটকে এই প্রতিবেদক মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টার পাশাপাশি খুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তবে তিনি সাড়া দেননি।
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে টুইট করেন। ওই টুইটে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের যে মৌলিক মানবাধিকার, তা নিশ্চিত ও সুরক্ষিত করতে হবে।’
উল্লেখ্য, বিভিন্ন বিষয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের তলবের বিষয়টি কূটনৈতিক কর্মকাণ্ডের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বাংলাদেশ আগেও নানা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের তলব করেছে। তবে সাম্প্রতিক ইতিহাসে জাতিসংঘের কোনো প্রতিনিধিকে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশের নজির নেই।