ব্র্যাকের অভিবাসন পুরস্কার পেলেন ১৬ সাংবাদিক

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে অতিথিরাছবি: ব্র্যাকের সৌজন্যে

অভিবাসন খাতে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের জন্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ১৬ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে অনলাইন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন প্রথম আলোর মাদারীপুর প্রতিনিধি অজয় কুণ্ডু। আজ রোববার রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার বলেন, চাহিদা অনুসারে দক্ষ কর্মী তৈরি হলে বাংলাদেশিরা ইউরোপে শ্রম অভিবাসন করতে পারবেন। নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত হলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ—দুই পক্ষই উপকৃত হবে। গণমাধ্যম বস্তুনিষ্ঠভাবে কাজ করলে বাংলাদেশের অভিবাসন খাত আরও এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানের মূল বক্তা বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, অভিবাসীরা প্রতিবছর দেশে ২২ থেকে ২৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। সরকারের উচিত এই খাতে বিনিয়োগে জোর দেওয়া এবং প্রবাসীদের কল্যাণ নিশ্চিত করা। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন অধিশাখা) মোহাম্মদ শাহীন বলেন, সরকার নানামুখী উদ্যোগের মাধ্যমে বিদেশগামীদের দক্ষ করে তুলতে কাজ করছে। দক্ষ শ্রম অভিবাসন হলে অভিবাসনপ্রক্রিয়া নিরাপদ হয়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্। তিনি বলেন, প্রবাসীদের অভিযোগ, কেউ তাঁদের সমস্যার কথা শোনে না। এ কারণে তাঁরা নিজেদের প্রাপ্য সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত হন।

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান। স্বাগত বক্তব্য দেন শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন এবং অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান ও জুরিবোর্ডের সদস্য হিসেবে বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার রাহনুমা সালাম খান।

অভিবাসন খাতে সাংবাদিকতার অবদানকে স্বীকৃতি দিতে ২০১৫ সালে মাইগ্রেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করা হয়। এ বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় ও ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রত্যাশা-২ প্রকল্পের সহায়তায় নবমবারের মতো এই পুরস্কার দেওয়া হয়। সংবাদপত্র (জাতীয়) বিভাগে যৌথভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর প্রতিবেদক কামরুন নাহার ও মাসুম বিল্লাহ। আজকের পত্রিকার সাইফুল মাসুম দ্বিতীয় এবং দৈনিক ইনকিলাবের হাসানুজ্জামান তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।

অনলাইন সংবাদপত্র বিভাগে প্রথম পুরস্কারটি জিতেছেন জাগো নিউজের মো. জাহাঙ্গীর আলম। দ্বিতীয় হয়েছেন প্রথম আলোর অজয় কুন্ডু এবং যৌথভাবে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন খবরের কাগজের শাকিলা আক্তার ববি ও বাংলা ট্রিবিউনের সাদ্দিফ সোহরাব অভি।

সংবাদপত্র আঞ্চলিক ক্যাটাগরিতে প্রথম হন একুশে পত্রিকার শরীফুল ইসলাম, দ্বিতীয় হন দৈনিক চট্টগ্রাম খবরের ইফতেখায়রুল ইসলাম এবং তৃতীয় হন সাপ্তাহিক চৌদ্দগ্রামের মো. শাহীন আলম। টেলিভিশন নিউজ বিভাগে বাংলাভিশনের কেফায়েতউল্লাহ চৌধুরী শাকিল প্রথম স্থান অধিকার করেন, তাঁর সঙ্গে ক্যামেরায় ছিলেন মোহাম্মদ রাজিবুল ইসলাম। দ্বিতীয় হয়েছেন চ্যানেল ২৪–এর মো. রাশেদুজ্জামান, তাঁর সঙ্গে ক্যামেরায় ছিলেন এস আই সুমন এবং তৃতীয় হয়েছেন আরটিভির মো. তানভীর হাসান, ক্যামেরা পারসন ছিলেন চ্যানেল ২৪–এর মো. জাকির হোসেন রানা। টেলিভিশন প্রোগ্রাম ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের মো. নাজমুল সাঈদ ও ক্যামেরা পারসন কাজী মোহাম্মদ ইসমাঈল। রেডিও বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা রেডিও তেহরানের মো. বাদশা মিয়া।

বিজয়ীরা পুরস্কার হিসেবে একটি ক্রেস্ট, সনদ এবং পুরস্কারের অর্থমূল্যের চেক পেয়েছেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দূতাবাস এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।