সাক্ষাৎকার

বার্ষিক মোট চাহিদা ৩৫ লাখ ইউনিটের বেশি

এখন শহর বা গ্রামের সাধারণ আয়ের পরিবারেও ফ্রিজ থাকে। আর এই পরিবর্তনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে দেশীয় ইলেকট্রনিকস কোম্পানিগুলো। দেশের অভ্যন্তরে প্রতিবছর ২৫-৩০ লাখ ইউনিট ফ্রিজ বিক্রি হয়। সাধারণত এ বাজার বছরে ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। আর স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখন বিদেশেও ফ্রিজ রপ্তানি হচ্ছে। দেশীয় ইলেকট্রনিকস কোম্পানিগুলোর ফ্রিজের বাজার নিয়ে কথা বলেছেন মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর।

প্রথম আলো:

রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের ভোক্তাগোষ্ঠী আসলে কারা?

মো. হুমায়ুন কবীর: শহর ও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন পরিবারের দৈনন্দিন রান্নার উপকরণ, মাছ-মাংস, দুধ, শাকসবজি, রান্না করা খাবার, কোমল পানীয় এবং  ফলমূল ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য সাধারণত রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের দোকান, সুপারশপ, রেস্তোরাঁ ও ক্যাফে, মাছ ও মাংস বিক্রেতা, দুগ্ধ ও বেকারি শিল্প, হাসপাতাল, ওষুধ সংরক্ষণ, গবেষণাগার এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোও রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার প্রচুর ব্যবহার করে থাকে।

প্রথম আলো:

দেশি ও বিদেশি ব্র্যান্ডের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারে কোনটি এগিয়ে?

মো. হুমায়ুন কবীর: পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে ফ্রিজের বাজার এখন এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি ও বার্ষিক মোট চাহিদা ৩৫ লাখ ইউনিটের বেশি। আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ফ্রিজের বাজারের বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি হবে ৫ থেকে ৬ শতাংশ হারে। বিগত কয়েক বছরে মিনিস্টারের মার্কেট শেয়ারও বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রথম আলো:

দেশি ব্র্যান্ডের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারে ক্রেতাদের আস্থা কেমন?

মো. হুমায়ুন কবীর: দেশি ব্র্যান্ডের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা বিগত এক দশকে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এক যুগ আগেও অনেক ক্রেতা মনে করতেন যে বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর গুণগত মান দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর চেয়ে উন্নত মানের। কিন্তু বর্তমানে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোও উন্নত প্রযুক্তি ও গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করার ফলে ক্রেতারা দেশীয়  ব্র্যান্ডের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা যায় দেশীয় রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের গুণগত মান বিদেশি ব্র্যান্ডের সমকক্ষ এবং দামে সাশ্রয়ী।

প্রথম আলো:

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

মো. হুমায়ুন কবীর: বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও বাজারের ক্রমবর্ধমান অসম প্রতিযোগিতা সামনে রেখে ভবিষ্যতের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন, উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, বাজার সম্প্রসারণ এবং গ্রাহকদের আরও উন্নত সেবা প্রদান। ক্রেতাদের রুচি-পছন্দ ও চাহিদার ওপর ভিত্তি করে নতুন নতুন ডিজাইন ও আকর্ষণীয় বৈচিত্র্যময় মডেলের ফ্রিজ বাজারে আনার পরিকল্পনা আছে। দক্ষিণ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বাজারে মিনিস্টার ফ্রিজ রপ্তানি শুরুর উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি আমরা।

প্রথম আলো:

বর্তমানে কী প্রযুক্তির রেফ্রিজারেটর বেশি চলছে?

মো. হুমায়ুন কবীর: বর্তমানে ইনভার্টার প্রযুক্তির বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্রিজ ও ফ্রিজারগুলো সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। উন্নত মানের কম্প্রেসর, বিল্ট–ইন ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রযুক্তি, ন্যানো হেলথ কেয়ার টেকনোলজি, ওয়াইড ভোল্টেজ রেঞ্জ, কপার কনডেন্সর, ইকো-ফ্রেন্ডলি আর৬০০এ গ্যাস, ভিটামিন প্রোটেক্টিভ টেকনোলজি ইত্যাদি প্রযুক্তি রয়েছে।