ইয়েমেনে আল-কায়েদার হাতে অপহৃত জাতিসংঘের বাংলাদেশি কর্মকর্তা সুফিউল উদ্ধার
ইয়েমেনে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল–কায়েদার হাতে অপহৃত জাতিসংঘের কর্মকর্তা বাংলাদেশি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সুফিউল আনামকে আজ মঙ্গলবার উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণের ১৮ মাস পর উদ্ধার হওয়া সুফিউল আনাম সুস্থ আছেন। আগামীকাল তাঁকে দেশে আনা হতে পারে।
একটি সরকারি সূত্র আজ রাতে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ইয়েমেনে অপহৃত হওয়া সুফিউল আনামকে উদ্ধার করেছে।
এদিকে উদ্ধার হওয়া সুফিউল আনামের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন। সেখানে তাঁর প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে।
সরকারি একটি সূত্র জানিয়েছে, আল–কায়েদার জঙ্গিদের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার পর সুফিউল আনাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
উদ্ধারের পর সংযুক্ত আরব আমিরাত অবস্থানরত সুফিউল আনামের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের ফোনে কথা হয়েছে। সুফিউল আনামের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা এখন কানাডায় আছেন।
সুফিউল ইয়েমেনের এডেনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিভাগের ফিল্ড সিকিউরিটি কো-অর্ডিনেশন অফিসার (প্রধান) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বছর ১১ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে কাজ করার সময় তিনি অপহৃত হন। ওই দিন জাতিসংঘের একটি ফিল্ড মিশন শেষে এডেনে ফিরছিলেন সুফিউল আনামসহ জাতিসংঘের আরও পাঁচ কর্মী। সে সময় ইয়েমেনের মুদিয়াহ প্রদেশ থেকে জঙ্গি সংগঠন আল–কায়েদার সদস্যরা তাঁকে অপহরণ করে। সুফিউল আনামের মুক্তিপণ হিসেবে ৩০ লাখ ডলার দাবি করেছিল জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা।
অপহরণকারীদের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করতে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন পক্ষের কাছে গত সেপ্টেম্বরে আকুতি জানান সুফিউল। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, খুবই দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন তিনি। অপহরণকারীদের দাবি মেনে না নিলে তাঁকে মেরে ফেলা হতে পারে। সুফিউলের ওই ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে অপহরণকারীরা। পরে সেটি সামনে আনে বিশ্বব্যাপী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর অনলাইন তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ।
ইয়েমেনে সুফিউল আনামের খোঁজ করতে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলকে সেদেশে যেতে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর অনুমোদন দিয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল কাজী মোহাম্মদ জাকারিয়াকে প্রধান করে ওই প্রতিনিধিদল গঠন করা হয়েছিল।