মানুষ অসাম্প্রদায়িক উৎসবের জন্য অপেক্ষা করে
ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতির কোনো বিরোধ নেই। দেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক উৎসবের জন্য অপেক্ষা করে। পয়লা বৈশাখের মতো বাঙালির শিকড়ের উৎসবগুলো যত করা যাবে, তত অসাম্প্রদায়িক চেতনা বাড়বে, কুসংস্কার দূর হবে।
রোববার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বর্ষবরণ–১৪১৩ উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। এরপর বহ্নি শিখার ‘কি সুন্দর বাঁশিটি যায় বাজাইয়া’ গানের দলীয় পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর নাচ, কবিতা আবৃত্তিসহ নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন চলে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সংস্কৃতিচর্চার আয়োজনের ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, স্কুল-কলেজে সংস্কৃতিচর্চা বাড়ানো ছাড়া সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যে বিরাট ধস নেমেছে, তার অবসান সম্ভব নয়।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, পয়লা বৈশাখের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, রমনা, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় মানুষের যে ঢল নেমেছে, তা দেখে মনে হয় বাংলাদেশ একটি সাংস্কৃতিক ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। তিনি আরও বলেন, সারা দেশে অসাম্প্রদায়িক শিক্ষাব্যবস্থা চালু না হলে দেশ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বিকেল চারটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দেয়। অবশ্য প্রশাসন সন্ধ্যার আগেই পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান শেষ করার জন্য বলেছিল।
এ বিষয়ে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ঝুনা চৌধুরী বলেন, ‘সন্ধ্যার আগেই অনুষ্ঠান শেষ করার জন্য সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে, তার প্রতিবাদ করছি মঞ্চে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। কারণ, পয়লা বৈশাখ একটি মাত্র অনুষ্ঠান, যেখানে সব সম্প্রদায়ের মানুষ একত্র হয়ে অনুষ্ঠান করে।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এই জোটের সহসাধারণ সম্পাদক আহমেদ গিয়াস।