অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা যেতে পারে, বৃহস্পতিবারই মত দেন সুপ্রিম কোর্ট

সুপ্রিম কোর্টফাইল ছবি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন ও উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করানো যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এই মতামত চেয়েছিলেন।

রাষ্ট্রপতির পাঠানো রেফারেন্সের (মতামত) পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ গতকাল বৃহস্পতিবার বিষয়টির ওপর মতামত দেন।

সাত সদস্যের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্য ছয় সদস্য হলেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।

সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপিল বিভাগের মতামত চাইতে পারেন।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে এবং নির্বাহী কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে এবং রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টামণ্ডলীকে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারেন বলে বিশেষ রেফারেন্সের (১/২৪) মাধ্যমে আপিল বিভাগ মতামত দিয়েছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১৪ উপদেষ্টা (প্রধান উপদেষ্টাসহ) গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনে শপথ নেন। এর মাধ্যমে নতুন সরকার যাত্রা শুরু করে।

এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। তাঁর পদত্যাগের পর দেশ পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন।

সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বৃহস্পতিবার একটি চিঠি আসে। ওই চিঠিতেই রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের মতামত জানতে চান। সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা, প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টাদের নিয়োগ এবং শপথ পাঠ করানো যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছেন।

জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানও প্রথম আলোর কাছে একই বক্তব্য দিয়েছেন।

সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের বিষয়ে বলা আছে।

অনুচ্ছেদটি বলছে, যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আইনের এইরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তা হলে তিনি (রাষ্ট্রপতি) প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করতে পারবেন এবং ওই বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করতে পারবেন।