‘কাঞ্চনফুলের কবি’র লেখক মাসউদ আহমাদ পেলেন সেরা বাঙালি পুরস্কার
রাজধানী ঢাকায় এসে রাজশাহীর জীবনাচরণের সঙ্গে কোথায় যেন একটা ফারাক দেখতে পান লেখক মাসউদ আহমাদ। লেখালেখির ভাবনা, স্পৃহার পরিবেশও রাজশাহীর মতো নয়।
মাসউদ আহমাদের সমসাময়িক লেখক যাঁরা, তাঁরা তত দিনে বেশ কিছু বই বের করে নামডাক করে ফেলেছেন। কিন্তু মাসউদ আহমাদ কিছুটা ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছিলেন। তিনি ছয় বছর কাজ করে বের করেন ‘কাঞ্চনফুলের কবি’ উপন্যাস। এ উপন্যাসই তাঁকে এনে দিয়েছে ‘এবিপি আনন্দ সেরা বাঙালি-২০২৩’ সম্মাননা।
মাসউদ আহমাদ গত ১৭ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার অন্যতম সম্মানজনক এই পুরস্কার পেয়েছেন সাহিত্য বিভাগে। চলতি বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি তাঁর ‘কাঞ্চনফুলের কবি’ উপন্যাসটি প্রকাশ করে কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্স।
‘কাঞ্চনফুলের কবি’ উপন্যাসটি কলকাতার ‘দেশ’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ছাপা হয়। যার দেড় বছরের মাথায় মাসউদ আহমাদ প্রকাশকের কাছ থেকে ফোন পান। উপন্যাস প্রকাশ, পুরস্কার অর্জন—সব মিলিয়ে তিনি বেশ অভিভূত, আনন্দিত। উপন্যাসটি লিখতে মাসউদ আহমাদের সময় লেগেছে ছয় মাস। তবে তার আগে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে এটি নিয়ে কাজ করেছেন।
কবি জীবনানন্দ দাশের ওপর লেখা হয়েছে ‘কাঞ্চনফুলের কবি’ উপন্যাসটি। জীবনানন্দের এক বন্ধুর ছোট একটি লেখা পড়ে কবির জীবন নিয়ে মাসউদ আহমাদ আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এরপরই কাজ শুরু করেন তিনি। সেটা ২০১৩ সালের দিকের কথা।
উপন্যাসটির নামকরণ নিয়ে লেখক বলেন, কাঞ্চন ফুল খুব পরিচিত নয়। আবার আকর্ষণীয় নয়। কিন্তু এর ঔষধি গুণ অনেক। জীবনানন্দ দাশের কবিতাও তাঁর কাছে তেমনই মনে হয়েছে, যা উপশম দেয়।
মাসউদ আহমাদের বাড়ি রাজশাহীতে। পড়াশোনাও সেখানে। রাজশাহীতে থাকাকালে তাঁর লেখালেখির ঝোঁক ছিল অনেক। পরে ঢাকায় এসে দেখলেন, এখানকার পরিবেশ অনেক ভিন্ন। তাই ঢাকায় থাকাকালে তাঁর লেখা বইয়ের পরিমাণ খুব বেশি হয়নি। তবে বিভিন্ন পত্রিকায় নানা সময়ে তাঁর লেখা ছাপা হয়েছে। গল্প-উপন্যাস মিলিয়ে তাঁর এ পর্যন্ত সাতটি বই বেরিয়েছে। এখন তিনি অদ্বৈত মল্লবর্মণের জীবন নিয়ে একটি উপন্যাস লিখছেন, যেটি প্রথমা প্রকাশন থেকে বের হবে।
মাসউদ আহমাদ একসময় সাংবাদিকতার পেশায় ছিলেন। এখন ব্যাংকিং পেশায় আছেন। তবে লেখালেখি তাঁর ‘প্যাশন’। তিনি আইএফআইসি ব্যাংক ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার-২০২২’ পেয়েছেন।