মজুরির দাবিতে আন্দোলনে এসে পোশাককর্মীর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল

বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনে এসে পোশাককর্মীর মৃত্যুর ঘটনা বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলছবি: প্রথম আলো

বকেয়া মজুরি ও ঈদ বোনাসের দাবিতে আন্দোলনরত এক তৈরি পোশাককর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় মালিক ও দায়ীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের শ্রমিকেরা। সোমবার রাজধানীর শ্রম ভবনের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। শ্রমিকদের বেতন বকেয়া পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

সোমবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর শ্রম ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। তাঁরা লাল ও কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করেন। নানা ধরনের স্লোগান দেন। বিক্ষোভ মিছিলটি পল্টন মোড় দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে পুনরায় শ্রম ভবনের সামনে ফিরে আসে।

রাজধানীর শ্রম ভবনের সামনে বেতন–ভাতার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে রোববার বিকেলে অসুস্থ হয়ে রাম প্রসাদ সিং (৪০) নামের একজনের মৃত্যু হয়। রাম প্রসাদ গাজীপুরের স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড ও ইয়াং ওয়ান্স (বিডি) লিমিটেডের সহকারী প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রাম প্রসাদ সিংয়ের গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলায়। তাঁর বাবা কার্তিক কুমার। তিনি গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় বসবাস করতেন।

রোববার অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাম প্রসাদ সিংকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এক ব্যক্তি বলেন, ‘১৮ মার্চ থেকে বকেয়া বেতন ও আইনানুগ পাওনার দাবিতে চাকরিচ্যুত ওই গার্মেন্টের শ্রমিক-কর্মচারীরা রাজধানীতে শ্রম ভবনের সামনে আন্দোলন করে আসছিলেন। সেখানে রাম প্রসাদ সিং অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। প্রথমে তাঁকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’

শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি জালাল হাওলাদার বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাইদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে মাঠে নেমেছি। প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছিল মালিকের সঙ্গে বসে সুরাহা করে দেবে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা শেষ হয়ে গেলেও প্রশাসন থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। অধিকার না আদায় হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব।’

শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘বেতনের দাবিতে এসে আমাদের শ্রমিক ভাই প্রাণ হারিয়েছে। তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় খরচ মালিকপক্ষ বহন করবে বলেও এখনো তাঁদের খোঁজ মেলেনি। আমাদের শ্রমিকেরা মিলে হাসপাতালের খরচ দিয়েছে। প্রশাসন মালিককে (শামস) নিয়ে আসবে বললেও এখনো গড়িমসি করছে। আমাদের জানানো হয়েছে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁকে আড়ালে রাখার পাঁয়তারা করছে প্রশাসন। যত দিন না আমাদের বেতন বকেয়া পরিশোধ না করছে, তত দিন আমরা অবস্থান করব এখানে।’