সৎ থেকেও অটল থাকার শিক্ষা দিয়েছেন রণেশ দাশগুপ্ত: স্মরণসভায় বক্তারা
নানা আয়োজনে উদ্যাপন করা হলো বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রণেশ দাশগুপ্তর ১১৪তম জন্মদিন। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর তোপখানা রোডে উদীচীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রণেশ দাশগুপ্তর স্মরণে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উদীচীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রদীপ জ্বালিয়ে সমবেত সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর রণেশ দাশগুপ্তর জীবন, আদর্শ ও রচনা নিয়ে আলোচনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্যরা।
সূচনা বক্তব্যে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে অমুসলিম হয়েও পুরান ঢাকার মুসলিমপ্রধান অঞ্চল থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন রণেশ দাশগুপ্ত, যা দলমত বা সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনা দূরে রেখে রণেশ দাশগুপ্তর জনপ্রিয়তাকে প্রমাণ করে।
অমিত রঞ্জন দে আরও বলেন, রণেশ দাশগুপ্ত নিজের আশপাশের মানুষকে শিখিয়ে গেছেন কীভাবে সৎ থেকে, নিজের আদর্শে অটল থেকে সমাজ পরিবর্তনের স্বার্থে ইতিবাচক কাজ করতে হয়। তিনি আজীবন একটি অসাম্প্রদায়িক মৌলবাদমুক্ত সাম্যবাদী সমাজ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন।
উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কোষাধ্যক্ষ বিমল মজুমদার বলেন, নিজের লেখা ও কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে রণেশ দাশগুপ্ত বারবারই সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন সাম্যবাদী সমাজব্যবস্থার গুরুত্ব। গত শতকে যখন সমাজতান্ত্রিক বিশ্বে বিপর্যয় নেমে আসে, তখনো তিনি নিজের লেখনীর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে লড়াইয়ের ময়দানে থাকার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।
স্মরণ উৎসবে আরও বক্তব্য দেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি নিবাস দে, প্রবীর সরদার, জামসেদ আনোয়ার, সহসাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি হাবিবুল আলম। এতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদসহ ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন শাখা সংসদের শিল্পী-কর্মীরা অংশ নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন উদীচীর সংগীত বিভাগের শিল্পীরা। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচী আবৃত্তি বিভাগের বাচিক শিল্পী আতিকুজ্জামান মির্জা ও শিখা সেন গুপ্তা।
রণেশ দাশগুপ্ত ১৯১২ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৭ সালের ৪ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।