শাহজালাল বিমানবন্দরের টার্মিনালে চার মাসেই ফাইভ-জি চালু কতটা সম্ভব
ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজের অনুমতি পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম বন্দরেও ফাইভ–জি প্রযুক্তি চালুর বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেই। কিন্তু এসব এলাকাসহ দেশের বন্দর, শিল্পাঞ্চল ও বাণিজ্যিক এলাকায় আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ফাইভ–জি প্রযুক্তি নিশ্চিত করার নির্দেশনা এসেছে।
মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে গত রোববার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) কলড্রপ–সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা আসে। সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এই নির্দেশনা দেন।
চলতি বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন হতে পারে। তাই অক্টোবরকে টার্গেট করে চার মোবাইল অপারেটরকে প্রতিমন্ত্রী ‘চ্যালেঞ্জ’ দিয়েছেন, যেন ৩০ অক্টোবরের মধ্যেই তারা উল্লিখিত এলাকায় ফাইভ–জি নিশ্চিত করে। রাজধানীর গুলশান, বনানী, মতিঝিল, আগারগাঁওয়ের মতো এলাকাকে যেন ফাইভ–জি চালুর ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়।
অপারেটর সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের অনুমতির জন্য এক বছর ধরে অপারেটররা দেনদরবার করে আসছে।
প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশের পর তৃতীয় টার্মিনালের নেটওয়ার্কের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখানে এখন পর্যন্ত অপারেটররা নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনার কোনো অনুমতি পায়নি।
অপারেটর সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের অনুমতির জন্য এক বছর ধরে অপারেটররা দেনদরবার করে আসছে।
মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সে বিষয়ে অপারেটররা নিজেদের মতো প্রস্তুতি নেবে ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তৃতীয় টার্মিনালে ইতিমধ্যে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের জন্য জরিপ পরিচালনা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা সাপেক্ষে কাজ শুরু করতে পারলে যথাসময়ে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
তৃতীয় টার্মিনাল পুরোপুরিভাবে চালু হতে আরও ৬ মাসের মতো সময় লাগতে পারে। সবকিছু চূড়ান্ত হলে অপারেটরদের বিষয়টিও চূড়ান্ত হবে।
অ্যামটব গত সোমবার বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) চিঠি দিয়ে বলেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি নেটওয়ার্ক নকশার চূড়ান্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। ইতিমধ্যে এই টার্মিনালের কাজ অনেকটা সম্পন্ন হয়ে যাওয়ায় সেখানে নেটওয়ার্ক স্থাপনা তৈরি করা চ্যালেঞ্জিং হবে। তবে এখন অনুমতি পেলে অন্তত ২১ সপ্তাহের মতো সময় লাগবে।
বেবিচকের সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) এয়ার কমোডর এ এফ এম আতিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তৃতীয় টার্মিনাল পুরোপুরিভাবে চালু হওয়ার জন্য জাপানের যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের আলোচনা চলছে, সেটাই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এতে ৬ মাসের মতো সময় লাগতে পারে। সবকিছু চূড়ান্ত হলে অপারেটরদের বিষয়টিও চূড়ান্ত হবে। এ বিষয়ে দাপ্তরিক কাজ চলছে।
রাজধানীর গুলশান, বনানী, মতিঝিল, আগারগাঁওয়ের মতো এলাকাকে যেন ফাইভ–জি চালুর ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামীণফোন ও রবি তাদের ফাইভ–জি প্রযুক্তি কীভাবে সেবা দেবে, সে–সংক্রান্ত একটি উপস্থাপনা দেখিয়েছিল বেশ আগে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফাইভ–জির বিষয়ে সম্প্রতি কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে আমরা আগ্রহী।’
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিমানবন্দর বা সমুদ্রবন্দরে যদি ফাইভ–জি চালু হয়, তাহলে সেখানকার পণ্য বা কনটেইনার কোথায় আছে, কোনটা কখন নামবে, কখন পৌঁছাবে, কত সময় লাগবে, কোন জায়গা খালি আছে—এমন সেবাগুলো অনেক সহজে ও দ্রুত পাওয়া যাবে।
ফাইভ–জির বিষয়ে সম্প্রতি কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে আমরা আগ্রহী।চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক