ভয় দেখিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহার করিয়ে ছাত্র-জনতাকে বিভ্রান্ত করা যাবে না
ভয়ভীতি দেখিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের দিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা ও বাংলাদেশ জাসদ। তারা বলেছে, এভাবে কর্মসূচি প্রত্যাহার করিয়ে দেশের ছাত্র-জনতাকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকতে ছাত্রসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনে সিপিবি কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা ও বাংলাদেশ জাসদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আলোচনার বিষয়গুলো গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে জানান বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য রাজেকুজ্জামান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে অব্যাহতভাবে গণগ্রেপ্তার, দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের ঘটনা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। সরকার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় গ্রেপ্তার-নির্যাতনের মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদ রক্ষা করতে চাইছে। দমন-নির্যাতন করে অতীতে কোনো সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, বর্তমান সরকারেরও শেষ রক্ষা হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দমন-নির্যাতন করে অতীতে কোনো সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, বর্তমান সরকারেরও শেষ রক্ষা হবে না। গণগ্রেপ্তারে সরকারের প্রতি গণঅসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে এবং সরকার সম্পূর্ণ গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন জেলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমন্বয়কদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে তুলে নিয়ে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ ছয় সমন্বয়ককে কথিত নিরাপত্তা হেফাজতের নামে আটক রেখে, নির্যাতন ও ভীতি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা পাঠ করতে বাধ্য করা হয়েছে, যা সংবিধানে বর্ণিত অনুচ্ছেদ ৩৩ ও অনুচ্ছেদ ৩৫ (৪)-এর সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। তাই অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার, সেনাবাহিনী-বিজিবিকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-আবাসিক হল খুলে দেওয়া, নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ ও হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়।
সভায় বাম গণতান্ত্রিক জোট, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা ও বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ। এ সময় বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা প্রমুখ।