ডেঙ্গুতে দুজনের মৃত্যু, দুজনই বরিশালের

ডেঙ্গুফাইল ছবি: বাসস

দেশে আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা দুজনই বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তাঁদের মধ্যে একজন নারী, অপরজন পুরুষ।

প্রথম আলোর বরিশালের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, মারা যাওয়া দুজনই বরগুনা জেলার বাসিন্দা। তাঁদের একজনের বয়স ৩৬ বছর, অপরজনের ৪০ বছর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ সকাল ৮টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২ জন। তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ জন ভর্তি হন বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা তিনজন করে মোট ছয়জন। ঢাকা বিভাগের জেলা পর্যায়ে ভর্তি রোগী চারজন। বাকি দুজন চট্টগ্রাম বিভাগের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ৫ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার একটি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত মধ্যবয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছিল। ওই মৃত্যুর দেড় মাস আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একই এলাকার হাসপাতালে মধ্যবয়সী আরেক নারীর মৃত্যু হয়েছিল। এ নিয়ে চলতি বছর ১২ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত ১৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হলো। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন এবং জানুয়ারিতে ১০ জন মারা যান।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মানুষের সংখ্যা ২ হাজার ৭৪ জন। তাঁদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জনসহ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৯৫৬ জন।

দেশে ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হয়। ওই বছর ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। আর গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়, হাসপাতালে ভর্তি হন ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন।

কেন বরিশালে ডেঙ্গু বেশি

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, এ বিভাগে ২০২১ সালে প্রথম ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই সময় যাঁরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতেন, তাঁদের বরিশালের বাইরে ভ্রমণের ইতিহাস ছিল। কিন্তু দুই বছর ধরে যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের প্রায় শতভাগ স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা গোটা বরিশাল বিভাগেই ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে আক্রান্তের হারও বাড়ছে।

শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল আরও বলেন, বরিশালে স্বাস্থ্য বিভাগের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এটা করতে হলে সরকারি-বেসরকারিভাবে সম্মিলিত উদ্যোগ এবং ব্যক্তিগত সচেতনতা প্রয়োজন। বর্তমানে বরিশালে ডেঙ্গু নিয়ে যেসব রোগী আসছেন, তাঁদের বেশির ভাগই প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের।