সুনামগঞ্জে শুরু হচ্ছে শাহ আবদুল করিম লোক উৎসব
কালনীর কূলের বসন্ত বাতাস দোলায়িত করত ভাটির সম্রাট বাউল শাহ আবদুল করিমকে। মনের গভীর থেকে উঠে আসা মাটির সুরে সাদাসিধে কথা আর উপমা বসিয়ে কালনীর কূলে বসেই তিনি তৈরি করেছেন অসংখ্য শ্রোতৃপ্রিয় কালজয়ী বাউলগান। তাঁর সৃষ্টিজুড়ে আছে মানুষের, সাম্যের ও প্রেমের জয়গান।
মরমী এই শিল্পীকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে, তাঁর সৃষ্টিকে অনন্যতায় স্মরণ করতে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধলে ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘শাহ আবদুল করিম লোক উৎসব’। শাহ আবদুল করিম পরিষদ আয়োজিত উৎসবে এবারও সহযোগিতায় থাকছে দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশ।
১৫ বছর ধরে আয়োজিত এ উৎসবে এবারও বাউলসম্রাটের ভক্ত-অনুরাগীরা তাঁর গান দিয়ে তাঁকেই স্মরণ করবেন। বসন্তের মাতাল হাওয়া আর ভক্তিতে পূর্ণ হয়ে উজানধল গ্রামের আনাচকানাচে বেজে উঠবে আবদুল করিমের সুর। স্থানীয় মানুষের পাশপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের বাইরে থেকে আসা ভক্ত-সুধীজনেরাও অংশ হয়ে উঠবেন এই উৎসবের।
শাহ আবদুল করিম পরিষদের সভাপতি ও বাউলসম্রাটের পুত্র শাহ নুর জালাল বলেন, দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের অতিথিরা বাউলসম্রাটের জীবন নিয়ে আলোচনা ও দেশের বিখ্যাত শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে এসে যে কেউ এই আয়োজনের অংশ হয়ে উঠতে পারবেন।
বাউলসাধক শাহ আবদুল করিমের তৈরি করা কালজয়ী হৃদয়ছোঁয়া অসংখ্য গান যেমন এই আসরে শোনার সুযোগ থাকছে, একই সঙ্গে রয়েছে করিমের স্মৃতিবিজড়িত দিরাইয়ের প্রকৃতি ঘুরে দেখা ও উপভোগেরও সুযোগ। বাউলের বাড়িতে এবং বাড়ির পাশের উজানধল মাঠে গানের জলসা, স্মৃতিচারণা আর লোকচর্চায় তাঁকে স্মরণ করার জন্যই মূলত এ আয়োজন।
বাংলা লোকগানের এই বাউলসম্রাটের স্মরণে ২০০৬ সাল থেকে এ উৎসব আয়োজিত হয়ে আসছে।
স্থানীয় এলাকার মানুষসহ সারা দেশ থেকে আসা ভক্ত-সাধকদের পাশাপাশি সংগীতপ্রেমী ও ভ্রমণপিয়াসীদের পদচারণ এই আয়োজনকে এবারও সার্থক করে তুলবে বলে আশা আয়োজকদের।