তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ নিরসনে সরকারের কাছে তিন প্রস্তাব

তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও মাওলানা জোবায়ের পক্ষের মধ্যে বৈষম্য নিরসন ও চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সচেতন ছাত্রসমাজের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করেন সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাছবি: প্রথম আলো

তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও মাওলানা জোবায়ের পক্ষের মধ্যে বৈষম্য নিরসন ও চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধানে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন সম্মিলিত ১৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সচেতন ছাত্রসমাজের ব্যানারে সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই দাবি জানিয়ে সরকারের কাছে তিন দফা প্রস্তাব পেশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সচেতন ছাত্রসমাজের প্রতিনিধি ও রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী সরকার তাবলিগ জামাতের বিবদমান মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও মাওলানা জোবায়ের পক্ষের মধ্যে ন্যায়ভিত্তিক স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগ নেবে বলে তাঁরা আশা করেন। তাই সচেতন ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে ইনসাফ ও ন্যায়ভিত্তিক স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সরকারের কাছে তিন দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে।

প্রস্তাবগুলো হলো মাওলানা জোবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভী পক্ষ যেন তাদের সর্বোচ্চ মুরব্বিদের নিয়ে যাঁর যাঁর কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। উভয় পক্ষের জন্যই কাকরাইল মসজিদ, টঙ্গী ময়দান ও দেশের প্রতিটি মসজিদে তাবলিগের আমলে সমতা নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে উভয় পক্ষকে একে অপরের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য ও কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে হবে। একই সঙ্গে ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব অনাকাঙ্ক্ষিত হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, তাবলিগ জামাত সারা বিশ্বে ইসলামের দাওয়াহ কার্যক্রমের অন্যতম মাধ্যম। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তাবলিগ জামাতের অভ্যন্তরীণ বিভেদ সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে প্রাণহানির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। এটি দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা ও শান্তিশৃঙ্খলার জন্য হুমকিস্বরূপ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচেতন ছাত্রসমাজের প্রতিনিধি ও বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞানের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র মঈনুল হোসেন বলেন, ২০ জানুয়ারির মধ্যে তাঁদের পেশ করা প্রস্তাবগুলো নিয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে তাঁরা সচেতন নাগরিকদের নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও মাওলানা জোবায়ের পক্ষের মধ্যে বৈষম্য নিরসন ও চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সচেতন ছাত্রসমাজ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল, যা গত ১৮ ডিসেম্বর স্থগিত করা হয়েছিল।