তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্য বিভ্রান্তিমূলক: টিআইবি
জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের সম্পদের হিসাব নিয়ে টিআইবির বিশ্লেষণ সম্পর্কে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বক্তব্যকে বিভ্রান্তিমূলক বলেছে টিআইবি। এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার টিআইবির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি টিআইবি কর্তৃক প্রকাশিত ‘নির্বাচনী হলফনামার তথ্যচিত্র: জনগণকে কী বার্তা দিচ্ছে?’ শীর্ষক বিশ্লেষণ সম্পর্কে গণমাধ্যমে প্রকাশিত মন্ত্রীর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর প্রতি এই আহ্বান জানানো হয়।
‘টিআইবির দেওয়া কোটিপতির হিসাবে গরমিল আছে এবং তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘টিআইবি সম্পর্কে মাননীয় মন্ত্রী বিষোদ্গার করতে গিয়ে “কোটিপতি” প্রার্থীর ব্যাখ্যায় নিজের মনগড়া ও বিভ্রান্তিমূলকভাবে স্থাবর সম্পত্তির মূল্য অন্তর্ভুক্ত করার অপচেষ্টা করেছেন। অথচ টিআইবি যথানিয়মে এ–সংক্রান্ত বিশ্লেষণে নগদ ও ব্যাংকে রক্ষিত টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও স্বর্ণালংকারসহ শুধু অস্থাবর সম্পদের হিসাব বিবেচনায় নিয়েছে। জমি, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের দাম কত, তার অবতারণা এ ক্ষেত্রে অবান্তর। তিনি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পার্থক্য বুঝতে পারছেন না বা চাচ্ছেন না বলেই ধরে নেওয়াই যৌক্তিক।’
সরকারকে ‘বেকায়দায় ফেলা’ টিআইবির উদ্দেশ্য—এ বক্তব্যকে হাস্যকর বলেছেন ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন নিয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে রাষ্ট্রকাঠামোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে টিআইবি।
মাননীয় মন্ত্রীর মনে রাখা উচিত যে নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়েই হলফনামায় প্রার্থীর সুনির্দিষ্ট আট ধরনের তথ্য প্রকাশের বিধান করা হয়েছে। টিআইবি সব প্রার্থীর হলফনামার সব তথ্য ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করেছে এবং জনগণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে।
টিআইবি মনে করে, যেসব প্রতিষ্ঠান এই বিশ্লেষণ থেকে উপকৃত হতে পারে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাজনৈতিক দল—যাদের জন্য এই প্রতিবেদন আত্মজিজ্ঞাসার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।’
পদ্মা সেতু প্রকল্পে কথিত দুর্নীতির বিষয়ে টিআইবির অবস্থান সম্পর্কে মন্ত্রীর বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলেছে টিআইবি। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘টিআইবি কখনো বলেনি যে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে; বরং বিশ্বব্যাংক উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছে এবং একই সঙ্গে অত্যন্ত জোরালোভাবে দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়ন বন্ধ করার ঘটনাকে নজিরবিহীন আখ্যায়িত করে বিশ্বব্যাংকেরও জবাবদিহি চেয়েছে।’