বকেয়ার কারণে জ্বালানি তেল আমদানি বিঘ্নিত হতে পারে

জ্বালানি তেল
ফাইল ছবি: রয়টার্স

ডলারের সরবরাহ কমার কারণে জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধে দেরি হচ্ছে। এতে বকেয়ার পরিমাণ বাড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি তেল আমদানি বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জ্বালানি বিভাগ।

আজ বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে দেওয়া জ্বালানি বিভাগের এক প্রতিবেদনে এ আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। বৈঠকে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ ও জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা, বিপুল পরিমাণ কয়লা, গ্যাস ও ডিজেলের চাহিদা ও ডলার সরবরাহ সংকোচনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্য সময়োচিত পদক্ষেপের বিষয়ে আলোচনা হয়।

বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে জ্বালানি বিভাগ আরও বলেছে, দেশের চাহিদা পূরণের জন্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) প্রতি মাসে প্রায় পাঁচ লাখ টন পরিশোধিত এবং এক লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকে। কিছুদিন ধরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এলসি (ঋণপত্র) খুলতে অনীহা প্রকাশ করছে। কোনো কোনো ব্যাংক এলসি খুলতে ১০-১৫ দিন পর্যন্ত দেরি করছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আমদানি প্রক্রিয়া ব্যাহত, তথা জ্বালানিসংকট দেখা দিতে পারে।

প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশও করা হয়। তাতে বলা হয়, সূচি অনুযায়ী জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রাখতে জরুরি ভিত্তিতে বকেয়া মূল্য পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বা অর্থ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। যথাসময়ে এলসি খোলার জন্য সরকারি ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি আগের মতো বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খোলার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা চাওয়া যেতে পারে। যথাসময়ে এলসি খোলা ও মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। যথাযথ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বিলাসবহুল পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে।

অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যায়ক্রমে পাইকারি ও খুচরা বিদ্যুতের বিক্রয়মূল্য বাড়ানো প্রয়োজন। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম এক টাকা বাড়ালে ভর্তুকির পরিমাণ বছরে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা কমবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, সংসদীয় কমিটি শুধু আমদানি-নির্ভর না থেকে জ্বালানির দেশি উৎস অনুসন্ধানে জোর দিতে বলেছে। যেসব গ্যাসক্ষেত্র আছে, সেগুলোতে উৎপাদন বাড়ানো, নতুন কূপ অনুসন্ধান এবং জল-বায়ুবিদ্যুতের মতো বিকল্পের দিকে গুরুত্ব দিতে বলেছে।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটি বাৎসরিক জ্বালানি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে।

কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, আ স ম ফিরোজ, হাফিজ আহমদ মজুমদার, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, পনির উদ্দিন আহমেদ, ফেরদৌসী ইসলাম এবং মোকাব্বির খান অংশ নেন।