মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, প্রয়োজনে জাতিসংঘে যাব: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না। বাংলাদেশ আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করতে চায়।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা আহসানিয়া মিশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এক মাসের বেশি সময় ধরে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মির’ গোলাগুলি চলছে। ঘুমধুম সীমান্তে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যাতেও গোলাগুলি চলেছে। গতকাল রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল এসে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়ে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়।
এতে এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা আহত হয়েছে। আজ সাংবাদিকেরা সীমান্তের এ পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চান।
জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমাদের সীমানায় এসে যে গোলাবারুদ পড়ছে, এটার কড়া ভাষায় আমরা প্রতিবাদ করছি। ওদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। সুস্পষ্টভাবে আমাদের অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কখনোই যুদ্ধ চান না, আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাধান। তাদের যে ইন্টারনাল কনফ্লিক্ট (অভ্যন্তরীণ সংঘাত), সেটা তাদের সীমানার ভেতরেই থাকুক। বাইরে যেটা আসছে, সেটার সব সময় প্রতিবাদ করে আসছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করছি। শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমাদের পক্ষ থেকে নাহয় জাতিসংঘের কাছে তুলব। আমরা সবকিছু করব।’
বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় মিয়ানমারের কথা দিয়ে কথা না রাখার বিষয়ও উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার কোনো সময়ই কথা দিয়ে কথা রাখে না। আমরা দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়—সব চেষ্টাই করে যাচ্ছি। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
আমরা চাই, ১২ লাখ রোহিঙ্গা এখানে আশ্রয় নিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে তারা যেন প্রত্যাবাসিত হয়, সে চেষ্টা আমরা করছি।’
মিয়ানমারে অনেকগুলো জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী নিয়ে সমস্যা আছে বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা দেখছি মিয়ানমার শুধু রোহিঙ্গা নয়, তাদের অনেক জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। থাইল্যান্ড, চীন, মিজোরাম এবং আমাদের সীমানা ধরে যুদ্ধ চলছে। আমরা লক্ষ করছি, আরাকান আর্মি নামে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী সেখানে যুদ্ধ করছে। তাদের সঙ্গে কখনো দেখি ভালো ভাব, কখনো দেখি যুদ্ধ। ভেতরে কী রহস্য, সেটা তারাই ভালো জানে। তাদের যুদ্ধ তাদের সীমানায় থাকা উচিত।’