হিযবুত তাহরীরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি
হিযবুত তাহরীরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আইনজীবী নূর মোহাম্মদ। এতে বলা হয়, পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ভারতের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি জনসমক্ষে প্রকাশের জের ধরে হাসিনা সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করেছিল। তখন সেনাবাহিনীর কল্যাণের কথা চিন্তা করে হিযবুত তাহরীর স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সাহসীভাবে রুখে দাঁড়ায়। তাদের ষড়যন্ত্র প্রকাশ করতে ব্যাপকভাবে প্রচারপত্র বিতরণ, আলোচনা সভা, সমাবেশ ও মিছিলসহ ধারাবাহিক প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করে। তখন হিযবুত তাহরীরের প্রচারপত্রের শিরোনাম ছিল ‘সেনাবাহিনী ও বিডিআরকে (বর্তমান বিজিবি) ধ্বংস করার ভারতীয় ষড়যন্ত্র এবং সরকারের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদ করুন।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ওই সময় হিযবুত তাহরীরকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার সংগঠনটির কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। পরে একটি ‘প্রেস নোট’ জারি করে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে—যার কোনো আইনগত ও সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। কারণ, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে হলে তা সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯-এর ১৮(১) ধারার অধীনে প্রয়োগযোগ্য হতে হবে। কিন্তু সরকার নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষেত্রে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি। হিযবুত তাহরীর কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা আদালতে প্রমাণিত হয়নি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, যেহেতু এ সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলন থেকে উদ্ভূত হয়েছে, তাই এই সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো ও অনতিবিলম্বে হিযবুত তাহরীরের ওপর থেকে বেআইনি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া।
এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনটির সমন্বয়ক (মিডিয়া) ইমতিয়াজ সেলিম। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো সহিংস কার্যক্রমের সঙ্গে কোনোকালেই জড়িত ছিলাম না। হিযবুত তাহরীর এমন কোনো দলও না।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯–এর অধীনে বিদ্বেষ ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে হিযবুত তাহরীরের কার্যক্রমকে ‘জননিরাপত্তার জন্য হুমকি’ এবং ‘দেশের আইনশৃঙ্খলাবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করে বেআইনিভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ৫ সেপ্টেম্বর আবেদন করা হয়েছে।