কক্সবাজারে বিএনপি কার্যালয়ে আগুন, আওয়ামী লীগের দুই সংসদ সদস্যসহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কক্সবাজার জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন দেওয়ার অভিযোগে দুই সাবেক সংসদ সদস্যসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এই মামলা করেন জেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও শহরের বাহারছড়া এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম।
মামলার আসামিদের মধ্যে অন্যতম সাবেক হুইপ ও কক্সবাজার–৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার, সাবেক সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ, আওয়ামী লীগ নেতা দীপক দাশ, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মিজানুর রহমান, শহর শ্রমিক লীগের সভাপতি রুহুল কাদের, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমদ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ৪ আগস্ট রাতে আসামিরা কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু করেন। এ সময় আসামিরা গানপাউডারসহ দাহ্য দ্রব্যাদি দিয়ে বিএনপি কার্যালয় জ্বালিয়ে দেন। নিরীহ জনতার ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করেন। এতে অজ্ঞাতনামা এক যুবক নিহত ও অনেকে আহত হন। সড়কের পাশে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরা ও পাশে বিএনপি নেতার রেস্তোরাঁয় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্বৈরাচার হাসিনার শাসনামলে বিএনপির এই কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা একাধিকবার হামলা ও ভাঙচুর করেছে। কিন্তু তাঁরা থানায় মামলা করতে পারেননি। উল্টো বিভিন্ন গায়েবি মামলায় দলের নেতা-কর্মীদের আসামি করে এলাকাছাড়া করা হয়েছে। ছাত্র–জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটলে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মাঠে নামেন। বিএনপি কার্যালয়ে সেদিন যাঁরা ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, মামলায় তাঁদের আসামি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের কেউ এলাকায় নেই। গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য, ১৭ আগস্ট রাতে সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ারসহ আওয়ামী লীগের ১৫০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আরেকটি হত্যা মামলা হয়েছে। ৪ আগস্ট বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র–জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ২৫ বছর বয়সী অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মৃত্যু হয়। ঘটনার ১৩ দিন পর হত্যা মামলাটি করেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেলিম মিয়া। গতকাল পর্যন্ত গুলিতে নিহত ওই যুবকের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। মরদেহ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।