করোনাকালে গর্ভধারণ মা ও শিশুর জন্য খারাপ ছিল: গবেষণা

করোনা পরীক্ষাপ্রতীকী ছবি

করোনা মহামারি গর্ভবতী নারীর শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারির মধ্যে গর্ভধারণ করেছেন এমন মায়েরা বেশি জন্ম দিয়েছেন অকালিক ও কম জন্মওজনের শিশু। এ ধরনের মায়েদের সন্তান বেশি হারে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখতে হয়েছিল।

গর্ভবতী মায়েদের ওপর করোনা বা কোভিড–১৯ মহামারির প্রভাব নিয়ে এই গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্নল্ড স্কুল অব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। গত সপ্তাহে তাঁদের গবেষণা প্রবন্ধ এনালস অব এপিডেমিওলজিতে প্রকাশ করা হয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুয়ান প্রদেশে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ শনাক্ত হয়। এর পরের ইতিহাস বিশ্ববাসীর জানা। মানুষ প্রস্তুত হওয়ার আগেই সারা বিশ্বে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। দেখা দেয় মহামারি। করোনা মহামারি বা কোভিড–১৯ মহামারি নামে তা পরিচিতি পায়। স্বাস্থ্যের ওপর করোনার প্রভাব নিয়ে সারা বিশ্বে অসংখ্য গবেষণা হয়েছে। নতুন নতুন গবেষণার ফল প্রকাশ পাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও গবেষণা হবে। বাংলাদেশেও বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত মানুষ প্রথম শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ।

যুক্তরাষ্ট্রের ওই গবেষকদের একজন অধ্যাপক শিয়াওমিং লি বলেন, তীব্র সংক্রমণে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থায় পরিবর্তন আসার কারণে গর্ভবতী নারীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েন। মহামারির সময় আক্রান্ত গর্ভবতী নারীদের অনেকেরই সন্তান জন্ম দেওয়ার পর সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

গবেষকেরা ২০২০ সালের ১ মার্চের আগে জন্ম দেওয়া মা ও সন্তান, মহামারির ঠিক আগে গর্ভধারণ করা ও মহামারির মধ্যে সন্তান জন্ম দেওয়া মা ও তাদের সন্তান এবং মহামারির মধ্যে গর্ভধারণ করা ও মহামারির মধ্যে সন্তান জন্ম দেওয়া মা ও তাদের সন্তানদের নিয়ে গবেষণা করেছেন। তারা ১ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭ প্রসবের তথ্য পর্যালোচনা করেছেন। এত মা ও সন্তানের তথ্য তাঁরা পেয়েছেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য রেকর্ড থেকে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মহামারির মধ্যে গর্ভবতী মায়েরা অকালিক শিশু ও কম ওজনের শিশু বেশি জন্ম দিয়েছেন। মহামারির মধ্যে গর্ভবর্তী হওয়া মায়েদের সন্তানদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখার হারও বেশি। মহামারির সময় মায়েরা শিশুদের বুকের দুধও কম খাইয়েছেন। এই গবেষণা থেকে শিক্ষা হচ্ছে যে গর্ভাবস্থায় সংক্রমণ হলে এবং সংক্রমণ তীব্র হলে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে মায়ের ও নবজাতকের স্বাস্থ্যে।