২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গণবিজ্ঞপ্তি কাগজেই, হল ছাড়ছেন না অছাত্ররা

গণবিজ্ঞপ্তিতে বেঁধে দেওয়া সময়ের দুদিন পরও হল ছাড়েননি কেউ। এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারিও বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল; ফল হয়নি।

খন্দকার রফিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন ১১ বছর আগে। নিয়ম অনুযায়ী তাঁর ছাত্রত্বই নেই। অথচ ক্যাম্পাসের শাহ আমানত হলের একটি কক্ষ দখল করে থাকছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির এ সহসভাপতি।

বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের ছাত্রত্বও নেই। থাকেন শাহজালাল হলে। তিনি লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন ২০১২ সালে। শুধু এই দুজন নন, তাঁদের মতো ছাত্রলীগের আরও অন্তত ৩০ নেতা-কর্মী ছাত্রত্ব না থাকার পরও আবাসিক হলগুলোর কক্ষ দখল করে থাকছেন।

সর্বশেষ গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রতিবেদন তৈরির কারণে প্রথম আলোর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোশাররফ শাহকে মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এরপর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় দপ্তর। পাশাপাশি হল থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অছাত্রদের বের হয়ে যেতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তবে একই ধরনের বিজ্ঞপ্তি আগেও দেওয়া হয়েছিল। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কর্তৃপক্ষ বলেছিল, ১৫ মার্চের মধ্যে হল ছাড়তে হবে।

সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দুই দিন পার হলেও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হল ছাড়েননি। কর্তৃপক্ষও কাউকে বের করতে পারেনি। এর মধ্যে গত সোমবার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের উপপক্ষ বিজয়ের কর্মী বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলামের কক্ষ সিলগালা করতে গিয়েছিলেন আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষক মো. সেলিমুল হক, সাঈদ বিন কামাল চৌধুরী ও সদরুল আমিন। কিন্তু বিজয়ের কর্মীরা তাঁদের বাধা দেন। গালাগাল করেন অকথ্য ভাষায়। এ কারণে সিলগালা না করেই ফিরতে হয় শিক্ষকদের।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি হলের মধ্যে ছাত্রদের জন্য রয়েছে সাতটি ও ছাত্রীদের পাঁচটি। এসব হলে মোট আসন রয়েছে ৪ হাজার ৫৯২টি। ছাত্রদের ৭টি হলে আসন ২ হাজার ৭৩০টি। নিয়ম মেনে সর্বশেষ ২০১৭ সালের জুনে ছাত্রদের আবাসিক হলগুলোতে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম হলে থাকা নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে হলের আসন বরাদ্দ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে নেতা-কর্মীরা হলে থাকছেন।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেন, হলে অছাত্রদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। তালিকা ধরে এবার তাঁদের হল থেকে বের করা হবে।

অছাত্রদের হল থেকে বেরিয়ে যেতে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বসে থাকলে চলবে না বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ মু. সিকান্দার খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অছাত্রদের বের করতে না পারলে প্রয়োজনে সরকারের কাছে সহযোগিতা চাইতে পারে কর্তৃপক্ষ।