প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর: আলোচনায় ৭০০ কোটি ডলারের ঋণ 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনে রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে। ১০টি সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় এক দশক পর জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে চীনে রাষ্ট্রীয় সফরে যাচ্ছেন। আগামী ৯ জুলাই বেইজিংয়ে প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বাংলাদেশের বাজেট–ঘাটতি পূরণে আর্থিক সহায়তা এবং নতুন প্রকল্পে অর্থায়নের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।

আসন্ন সফরে সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতার নানা বিষয় প্রাধান্য পাবে। এর পাশাপাশি সমকালীন পরিস্থিতি বিবেচনায় ভূরাজনীতির বিষয়টি দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের আলোচনায় চলে আসতে পারে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র সম্প্রতি প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এবারের সফরের বিশেষ দিকটি হবে বাংলাদেশের জন্য চীনের ৭০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ৪০ কোটি ইউয়ানের বেশি ঋণ। এর মধ্যে বাণিজ্য–সহায়তার আওতায় ৫০০ কোটি ডলার ও বাজেট সহায়তার আওতায় ২০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় বাংলাদেশকে ঋণ দেবে চীন। এর পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে যেভাবে টাকা–রুপিতে লেনদেনের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই ধারাবাহিকতায় টাকা–ইউয়ানে লেনদেনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। এ ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুন

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং সফরের সময় সইয়ের জন্য এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে সাতটি সমঝোতা স্মারকসহ (এমওইউ) ১১টি দলিল চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি চলছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে চীনের বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ (জিডিআই), বাণিজ্য–সহায়তা, বিনিয়োগ সুরক্ষা, ডিজিটাল অর্থনীতি, সুনীল অর্থনীতি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সমীক্ষার ঘোষণা ও একাধিক মৈত্রী সেতু নির্মাণ ও সংস্কার।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কসহ ভূরাজনীতির বিষয় আলোচনায় আসতে পারে। আমাদের সব পক্ষের সংবেদনশীলতা ও স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে এগোতে হবে।
মুন্সি ফয়েজ আহমেদ, চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত 

জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরের মূল অগ্রাধিকার থাকবে বাণিজ্য ও অর্থনীতি। দুই দেশের অসম বাণিজ্যে ভারসাম্য আনা এবং যেসব সহায়তা দরকার, তা নিয়ে আলোচনা হবে। চীনের কাছ থেকে বাণিজ্য–সহায়তা ও বাজেট সহায়তার আওতায় ঋণ নিয়ে আলোচনা চলছে। সফরে এ বিষয় চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ভারতের সঙ্গে যেভাবে টাকা–রুপিতে লেনদেনের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই ধারাবাহিকতায় টাকা–ইউয়ানে লেনদেনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। এ ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

সফরের আগে আরেক সফর

প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং সফরের দুই সপ্তাহ আগে গতকাল শনিবার ঢাকায় এসেছেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লি জিয়ানছাও। চার দিনের বাংলাদেশ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন তিনি।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতার ঢাকা সফরটি প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং সফরের আগে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে ২০১৬ সালের পর দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক পর্যায়ে সম্পর্ক নিবিড় হয়েছে। এই প্রেক্ষাপট থেকে আসন্ন সফর ঘিরে বেইজিংয়ের মনোভাব তিনি ঢাকায় জানাবেন। এর পাশাপাশি তিনি দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাংলাদেশের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরের মূল অগ্রাধিকার থাকবে বাণিজ্য ও অর্থনীতি। দুই দেশের অসম বাণিজ্যে ভারসাম্য আনা এবং যেসব সহায়তা দরকার, তা নিয়ে আলোচনা হবে। চীনের কাছ থেকে বাণিজ্য–সহায়তা ও বাজেট সহায়তার আওতায় ঋণ নিয়ে আলোচনা চলছে। সফরে এ বিষয় চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন

মূল সফরটি দুই দিনের 

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজিং সফরের কথা রয়েছে। তবে সফরের মূল কর্মসূচি ৯ ও ১০ জুলাই সীমিত থাকবে। ৯ জুলাই দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। ১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এ সফরের সময় চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস অব চায়নার প্রেসিডেন্ট ঝাও লেজির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।

বাংলাদেশকে ৯৮ শতাংশ পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেও ওই দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি তেমন বাড়েনি। গত বছর বাংলাদেশ প্রায় ৭০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে।

চীনা মুদ্রায় বিপুল ঋণ

ঢাকা ও বেইজিংয়ের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ডলার–সংকট মোকাবিলা এবং ক্ষয়িষ্ণু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঠেকাতে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি দেশের কাছ থেকে ঋণসহায়তা চেয়েছে। এসব দেশের তালিকায় আছে চীন। কয়েক মাস আগে চীন ইউয়ানে ঋণ দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশটি ইতিমধ্যে বেশ কিছু দেশের সঙ্গে ইউয়ানে আন্তর্জাতিক লেনদেন করছে।

তবে চীন শুরুতে প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ স্থানীয় মুদ্রা ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন (বাণিজ্য–সহায়তার আওতা) ঋণ দিতে চেয়েছে। আর বাংলাদেশ বাজেট সহায়তার অংশ হিসেবে ঋণ চেয়েছে। বাংলাদেশের যুক্তি হচ্ছে ঋণটি বাণিজ্য–সহায়তা হিসেবে গ্রহণ করা হলে তা বাণিজ্যিক ঋণে পরিণত হতে পারে। এতে উচ্চ সুদ ও ঋণ পরিশোধকাল কম হতে পারে, যা বিদেশি ঋণের দায়দেনা পরিস্থিতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দীর্ঘ মেয়াদে স্বল্প সুদের ঋণ নেওয়া যেতে পারে। তাই বাণিজ্য–সহায়তার পরিবর্তে বাজেট সহায়তা হিসেবে এই ঋণ ব্যবহার করা বেশি যুক্তিযুক্ত। পরে চীনের সঙ্গে বাজেট সহায়তার আওতায় ঋণ পেতে আলোচনা করে।

জানা গেছে, এ মাসের শুরুতে বাংলাদেশ ও চীনের কর্মকর্তারা ঋণ নিয়ে আলোচনা করেন। শেষ পর্যন্ত চীন বাণিজ্য–সহায়তা ও বাজেট সহায়তা দুই প্রক্রিয়ায় ঋণ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানায়। এখন চীনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (সিডকা) ও রাষ্ট্রায়ত্ত এক্সিম ব্যাংক থেকে এই ঋণ দেওয়া হতে পারে বলে বেইজিংয়ের আলোচনায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

চীন থেকে পণ্য আমদানি করতে বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ ডলার খরচ করতে হচ্ছে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইউয়ান ব্যবহার করতে পারলে ডলার–সংকটের এই সময়ে বাংলাদেশের বড় পরিত্রাণ হবে।

২০২৬–এর পরও শুল্কমুক্ত সুবিধা

বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বিশাল অঙ্কের বাণিজ্য–ঘাটতি আছে। বাংলাদেশকে ৯৮ শতাংশ পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেও ওই দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি তেমন বাড়েনি। গত বছর বাংলাদেশ প্রায় ৭০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। আর আমদানি করেছে দুই হাজার কোটি ডলারের বেশি মূল্যের পণ্য। 

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, ৩ জুন বেইজিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ বিষয় পর্যালোচনার জন্য তুলে ধরা হয় যে চীনে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৯৮ শতাংশ শুল্কমুক্ত সুবিধা তেমন কাজ করছে না। এ ছাড়া ২০২৬ সালের পরেও যেন শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত থাকে, সে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর এবারের চীন সফরে অতীতের ধারাবাহিকতায় অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কসহ ভূরাজনীতির বিষয়গুলোও আলোচনায় আসতে পারে।
বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ

স্থানীয় মুদ্রায় লেনদেন

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ এখন দুই হাজার কোটি ডলারের বেশি, যার প্রায় পুরোটা বাংলাদেশের আমদানি। অর্থাৎ চীন থেকে পণ্য আমদানি করতে বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ ডলার খরচ করতে হচ্ছে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইউয়ান ব্যবহার করতে পারলে ডলার–সংকটের এই সময়ে বাংলাদেশের বড় পরিত্রাণ হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুই দেশের বাণিজ্যে লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে টাকা-রুপির আদলে টাকা-ইউয়ান চালু করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। বিশেষ করে দুই দেশের মধ্যে বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চীনের ন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রেগুলেটরি কমিশনের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। 

নতুন প্রকল্প

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফর করেছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। ঐতিহাসিক ওই সফরের সময় ২৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর মধ্যে ১৫টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে, ৬টির কাজ চলমান আছে এবং বাকি ৬টির বদলে নতুন প্রকল্প করারও চিন্তা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, এ মাসের শুরুতে বেইজিংয়ে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ কয়েকটি প্রকল্পের কথা তুলেছে, যা চীন বিবেচনায় নেওয়া যায় বলে উল্লেখ করেছে। এ সময় প্রকল্প যাচাই–বাছাই শেষ করতে অনেক সময়ক্ষেপণ হয়। এর ফলে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা নষ্ট হয় বলেও চীনের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।

ভূরাজনীতির আলোচনা প্রাসঙ্গিক

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর এমন একটা সময়ে হচ্ছে, যখন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিসরে নানা কিছু ঘটে চলেছে। আবার ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ঢাকা সফরের পর থেকে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে দুই দেশের সম্পর্ক নিবিড় হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে সংগত কারণেই রাখাইনের অবনতিশীল পরিস্থিতিসহ মিয়ানমার, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে ভূরাজনীতি, দক্ষিণ চীন সাগর, তাইওয়ানের মতো নানা প্রসঙ্গ আলোচনায় চলে আসার কথা বলে মনে করছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।

সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের নানা পর্যায়ের আলোচনার প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে একাধিক কূটনীতিক এই প্রতিবেদককে বলেন, ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিষয়টি চীন নানা পর্যায়ের আলোচনায় তুলেছে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের আগে বাংলাদেশের ভারত মহাসাগরীয় নীতিগত অবস্থান প্রকাশের পরও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা হয়েছে। এমনকি ওই সফরের সময় প্রচারিত যৌথ ইশতেহার নিয়ে চীনের খানিকটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল। পরে বাংলাদেশ এ বিষয় ব্যাখ্যা করলে আশ্বস্ত হয় চীন।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এ মুহূর্তে তাইওয়ান পরিস্থিতি নিয়ে চাপে রয়েছে চীন। ফলে এ বিষয়টি তারা তুলবে। যদিও বাংলাদেশ সব সময় ‘এক চীন’ নীতি অনুসরণের কথা বলে আসছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় চীনের সহযোগিতা চায়। আর চীন চাইছে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অবদান রেখে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অবস্থান জোরদার করতে। ফলে ভারত, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ সমমনা দেশগুলোর বিষয়ে নিজের অবস্থান চীন এবারও তুলতে পারে।

জানতে চাইলে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এবারের চীন সফরে অতীতের ধারাবাহিকতায় অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কসহ ভূরাজনীতির বিষয়গুলোও আলোচনায় আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে আমাদের সব পক্ষের সংবেদনশীলতা ও স্পর্শকাতরতা বিবেচনা করে এগোতে হবে। বৃহত্তর ভূরাজনীতি বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় স্বার্থের নিরিখে বিভিন্ন দেশের মতো চীনকেও এটা বোঝানো জরুরি যে সব দেশের স্পর্শকাতরতা ও সংবেদনশীলতাকে বাংলাদেশ বিবেচনায় নিয়ে থাকে।