আচরণগত পাঁচ কারণে সড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি: রোড সেফটি কোয়ালিশন
সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে নতুন সড়ক নিরাপত্তা আইনের দাবি জানিয়েছে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ। নিরাপদ সড়কের দাবিতে কাজ করা সংগঠনগুলোর এই জোট বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় আচরণগত কারণে পাঁচটি মূল ঝুঁকি আছে। অতিরিক্ত গতি, মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার না করা, সিটবেল্ট ব্যবহার না করা, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো ও শিশুদের জন্য নিরাপদ আসনের অনুপস্থিতি।
এসব আচরণগত বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নিরাপদ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথাযথ আইন ও নীতিমালা করা হলে সড়ক নিরাপদ হবে বলে মনে করছে তারা। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলা হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদস্য সংগঠন নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করলেও কেন দাবি পূরণ হচ্ছে না—এমন প্রশ্নের জবাবে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, দাবি দিন দিন জোরদার হচ্ছে। এটা গণমানুষের দাবি। সড়কে সুন্দর ব্যবস্থাপনা করে সবার জন্য নিরাপদ করতেই নতুন আইনের দাবি। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে নিরাপদ সড়কের বিষয়টি যুক্ত করতে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পথচারীদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাংলাদেশের সড়ক। প্রায় প্রতিদিনই তারা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বিআরটিএ বলছে, এ বছরের প্রথম ৮ মাসে ৩ হাজার ৫৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৩১৭ জন মারা গেছেন। এতে আহত হয়েছেন, ৫ হাজার ১৭২ জন। তবে দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হিসাব বিজ্ঞানসম্মতভাবে তৈরি করা হয় না। বাংলাদেশ পুলিশের হিসাবে গত বছর ৫ হাজার ৮৯টি দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৬৩৬ জন মারা গেছেন। আর নিরাপদ সড়ক চাই-এর হিসাবে, একই সময়ে ৭ হাজার ২৪টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ১০৪ জন মারা গেছেন। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরও কোনোভাবেই সড়ক দুর্ঘটনার হার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বর্তমান সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ ও সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২ মূলত সড়কে পরিবহনের জন্য আইন এবং সড়ক পরিবহনব্যবস্থা–সংক্রান্ত বিধিমালা। তাই নিরাপদ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে (সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ) নতুন আইন করা জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির কর্মসূচি ব্যবস্থাপক এম খালিদ মাহমুদ, বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম বজলুর রহমান, সিআইপিআরবির পরিচালক সেলিম মাহমুদ চৌধুরী, অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ, রোড সেফটি কোয়ালিশনের মহাসচিব লিটন এরশাদ প্রমুখ।