চট্টগ্রামে টানেল থেকে সরানো হলো বঙ্গবন্ধুর নামফলক

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশর প্রথম টানেল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামফলক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আজ বুধবারছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামফলক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের দুদিন পর আজ বুধবার টানেলের দুই প্রান্ত থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে টানেল শেষ হয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নামফলক সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে টানেল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামফলক খুলে নেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার এই কাজ শুরু হয়, বুধবার নামফলক সরানোর কাজ শেষ হয়েছে। তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত সোমবার পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনেই দেশ ত্যাগ করেন তিনি। পরদিন মঙ্গলবার সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়।

দায়িত্বে থাকার সময় গত বছরের ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুকন্যা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম টানেলের উদ্বোধন করেছিলেন। উদ্বোধনের পরদিন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে সরকারের সেতু বিভাগের অধীন সংস্থা সেতু কর্তৃপক্ষ।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের মূল দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এটি দেশের নদীর তলদেশের প্রথম টানেল। চীনা ঋণ ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এই টানেল তৈরি করা হয়েছে। টানেল দিয়ে যানবাহনে কর্ণফুলী নদী পার হতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মিনিট সময় লাগছে। ফলে মানুষের চলাচল সহজ হয়েছে।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ২০১৫ সালের নভেম্বরে ‘কনস্ট্রাকশন অব মাল্টিলেন রোড টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলী’ শীর্ষক টানেল প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের জুনে। তবে নির্মাণকাজ উদ্বোধন করা হয় ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৮ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। পরে ব্যয় বেড়ে হয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে নেওয়া হয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে।