মা ইলিশ রক্ষায় আজ রাত থেকে ২২দিন মেঘনায় মাছ ধরা বন্ধ
জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় আজ শনিবার দিবাগত রাত (১৩ অক্টোবর) থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মেঘনা নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এই নিষেধাজ্ঞার সময় প্রত্যেক জেলে ২৫ কেজি করে ভিজিএফের চাল পাবেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করার জন্য নদীতে মৎস্য বিভাগ, উপজেলা-জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে। গত বছরে অভিযান সফল হওয়ায় মাছের উৎপাদন বাড়ছে বলেন তিনি। সঠিক তালিকা তৈরি করে বরাদ্দকৃত চাল বিতরণের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে নিবন্ধিত জেলে ৪৩ হাজার ৩০০। এসব জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মেঘনা নদীতে সব ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এই ১০০ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় এসব এলাকায় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুতকরণ নিষিদ্ধ রয়েছে।
মজুচৌধুরীরহাট ঘাট এলাকার জেলে সোহেল হোসেন ও মারফত উল্যাহ বলেন, জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় এবং উৎপাদন বাড়াতে সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা মেনে জেলেরা নদীতে যাবেন না। সরকারের আইন মানবেন। তবে জেলেদের পুনর্বাসন করার কথা এখন পর্যন্ত হয়নি। প্রত্যেক জেলে যেন সরকারি সহায়তা পান, সেটাই আশা করেন তাঁরা।
এদিকে অনেক জেলে বলেন, বর্তমানে যেসব ইলিশ পাওয়া যায়, সেগুলো আকারে অনেক ছোট। পাশাপাশি ডিমওয়ালা ইলিশ কম পাওয়া যায়। এই অভিযান আরও ১০ দিন পরে দেওয়া হলে মা ইলিশ রক্ষায় ও জাটকা সংরক্ষণের উদ্যোগ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতো বলে দাবি করেন তাঁরা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করার জন্য নদীতে মৎস্য বিভাগ, উপজেলা-জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ সময়ে জেলেদের জন্য ২৫ কেজি হারে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। এরপরও যাঁরা আইন অমান্য করে নদীতে যাবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলেন, ইতিমধ্যে বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল জেলেদের মধ্যে বিতরণ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি হারে চাল দেওয়া হবে। কেউ বাদ যাবেন না।