পান্না কায়সার মারা গেছেন
লেখক, গবেষক, শিশু সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য পান্না কায়সার (৭৩) আর নেই। আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সম্পাদক রাজন ভট্টাচার্য এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পান্না কায়সার খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ছিলেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের স্ত্রী ছিলেন পান্না কায়সার। তিনি অভিনেত্রী শমী কায়সারের মা। তাঁর আরেক সন্তানের নাম অমিতাভ কায়সার।
পান্না কায়সারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শোক জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ বাদ জুমা রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে পান্না কায়সারের প্রথম জানাজা হবে। জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের বাসায় নেওয়া হবে। সেখানে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। পরে তাঁর মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামী রোববার বেলা ১১টায় তাঁর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। বেলা একটা পর্যন্ত তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। এদিন বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হবে। দাফনের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
পান্না কায়সারের জন্ম ১৯৫০ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পড়াশোনা করেন। পেশা হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন শিক্ষকতা। তিনি খেলাঘর, উদীচীসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
লেখালেখির জগতে পান্না কায়সারের প্রবেশ ১৯৯১ সালে। তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধ: আগে ও পরে’। তাঁর অন্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘মুক্তি’, ‘নীলিমায় নীল’, ‘হৃদয়ে একাত্তর’, ‘আমি ও আমার মুক্তিযুদ্ধ’, ‘মুক্তিযুদ্ধ-সমগ্র’, ‘একাত্তরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার’, ‘মুক্তিযুদ্ধের কথকতা’, ‘হৃদয়ে বাংলাদেশ’ প্রভৃতি।
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পান্না কায়সার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২১ পেয়েছিলেন।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল মেয়াদে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন পান্না কায়সার।