মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ঢাকায় পৌঁছেছেন
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া চার দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার পর তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন। বাংলাদেশ নিয়ে নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর উজরা জেয়াই যুক্তরাষ্ট্রের কোনো জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন।
উজরা জেয়ার সফরসঙ্গীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুও রয়েছেন। তাঁর এই সফরে বাংলাদেশে শ্রম অধিকার, মানবাধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মানব পাচার ও রোহিঙ্গা-সংকট নিয়ে আলোচনা হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে।
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চার দিনের সফরের তৃতীয় দিনে উজরা জেয়া বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। একই দিনে তিনি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তিনি পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে এক মধ্যাহ্নভোজসভায় অংশ নেবেন।
দুই দেশের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, উজরা জেয়া আগামী বৃহস্পতিবার সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, শ্রম অধিকার, মানবাধিকার, মানব পাচার ও রোহিঙ্গা-সংকট, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে আলোচনা করবেন। সফরের দ্বিতীয় দিনে আগামীকাল বুধবার তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শনে যাবেন।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন গতকাল সোমবার বিকেলে তাঁর দপ্তরে প্রথম আলোকে বলেন, মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে আলোচনায় নির্বাচন, মানবাধিকার পরিস্থিতি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রোহিঙ্গা-সংকটসহ দুই দেশের সম্পর্কের যেসব বিষয় নিয়ে তিনি কাজ করেন, সেগুলো নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হবে। এসব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানার পাশাপাশি বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে মার্কিন ভিসা দেওয়া হবে না-এমন শর্ত জুড়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন মে মাসে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা দেন। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে র্যাব এবং বিশেষায়িত ওই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই নিষেধাজ্ঞাকে ঘিরে দুই দেশের সম্পর্কে একধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল। জানুয়ারির শুরুতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকায় এসে র্যাবের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্টির কথা জানালে বাংলাদেশ-ওয়াশিংটন সম্পর্কের অস্বস্তি অনেকটা দূর হয়েছিল। কিন্তু নতুন মার্কিন ভিসা নীতি দুই দেশের সম্পর্কের জন্য নতুন করে বাড়তি অস্বস্তি তৈরি করেছে বলে কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন।