২০ বছরে কারা ও পুলিশ হেফাজতে কত মৃত্যু, জানতে চান হাইকোর্ট
দেশে গত ২০ বছরে কারা ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকে এ তথ্য জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। গত সোমবার দেওয়া আদেশের বিষয়টি আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে জানান রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন।
ছয় মাসের মধ্যে ওই প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
‘চট্টগ্রাম কারাগারে হাজতির অস্বাভাবিক মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের’ শিরোনামে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভাষ্য, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ৩৮ বছর বয়সী এক হাজতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই হাজতির নাম রুবেল দে। রুবেলের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে তাঁর স্বজনেরা অভিযোগ তুলেছেন, কারাগারের ভেতরে কারারক্ষী বা অন্য কয়েদিরা তাঁকে নির্যাতন করেছেন।
ওই প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) গত মাসের মাঝামাঝিতে রিটটি করে। রিটে হেফাজতে রুবেলের মৃত্যুর অভিযোগে বিচারিক অনুসন্ধান ও তাঁর পরিবারের সুরক্ষায় পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিটের ওপর শুনানি নিয়ে সোমবার আদালত রুলসহ আদেশ দেন। সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
আদেশের বিষয়টি আজ রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন প্রথম আলোকে বলেন, সারা দেশে গত ২০ বছরে কারা ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। হেফাজতে রুবেল দের মৃত্যুর অভিযোগ বিচারিক অনুসন্ধানে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিচারিক অনুসন্ধান করতে ও তাঁর পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, কারা মহাপরিদর্শক, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।