ডেঙ্গুতে এক শিশুসহ আরও ৫ জনের মৃত্যু

ডেঙ্গুফাইল ছবি: বাসস

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক শিশুসহ আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৫৬ জনের। তাদের মধ্যে শূন্য থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ৫৩।

আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ মারা যাওয়ার ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় দুজন করে চারজনের এবং খুলনা বিভাগে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৭৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের (দুই সিটি করপোরেশন এলাকা বাদে) হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ৬১ জন ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া খুলনা বিভাগে ৪৩, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪১, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪০, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৮, বরিশাল বিভাগে ৩৩, ময়মনসিংহ বিভাগে ৯, রাজশাহী বিভাগে ৪, রংপুর বিভাগে ৩ জন ও সিলেট বিভাগের হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ২ জন ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছর ঢাকাসহ সারা দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৯ হাজার ৫৬৯ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ছাড়া পেয়েছেন ৯৭ হাজার ৬৬৫ জন। চলতি মাসে ৮ হাজার ১০০ রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

গত বছর ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। চলতি বছর দেশে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যান গত নভেম্বরে—১৭৩ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ২০ হাজার ৯৫৬ রোগী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন। এরপর ঢাকা বিভাগের (ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বাদে) বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ১৮ হাজার ৩৭৭ জন ভর্তি হয়েছেন। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ৫৮৬ ডেঙ্গু রোগী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

অপর দিকে এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ২৩৩ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালগুলোয়। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ১০৩ জনের ও বরিশালে ৫৮ জনের।

আরও পড়ুন

ডেঙ্গুতে এখন সারা বছর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেঙ্গুর ধরন চারটি ডেনভি–১, ডেনভি–২, ডেনভি–৩ ও ডেনভি–৪। একজন মানুষের একটি ধরনে একবারই সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ডেনভি–১ ধরনে একবার আক্রান্ত হলে ওই ব্যক্তি আর কখনো একই ধরনে আক্রান্ত হবেন না। কারণ, তাঁর শরীরে ডেনভি–১ প্রতিরোধী ব্যবস্থা (অ্যান্টিবডি) গড়ে ওঠে। কিন্তু তাঁর অন্য ধরন দিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে, অর্থাৎ একজন ব্যক্তির মোট চারবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। একাধিকবার আক্রান্ত হলে জটিলতা বাড়ে।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৭০ শতাংশই ডেনভি–২। ডেনভি–৩ ও ডেনভি–৪ দিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন যথাক্রমে ২০ শতাংশ ও ৯ শতাংশ। বাকি ১ শতাংশ আক্রান্ত হচ্ছেন ডেনভি–১ ধরনে। আইইডিসিআরের পরিচালক আরও বলেন, আশা করা যায় ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমে আসবে।

আরও পড়ুন