সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) বছরে ১৫০ কোটি খাওয়ার স্যালাইনের প্যাকেট বিক্রি করে। ৫০ বছরে এসএমসির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য খাওয়ার স্যালাইন। ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠান নারী স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে বড় ধরনের কাজ করতে যাচ্ছে।
আজ বুধবার রাজধানীর বনানীতে এসএমসির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’-এ এসএমসির শীর্ষ কর্মকর্তারা এ তথ্য দেন। এসএমসির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাংবাদিকদের জন্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা পপুলেশন সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনালের যৌথ উদ্যোগে এসএমসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নানা ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিজেদের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করবে এসএমসি।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, ‘ফ্যামিলি প্ল্যানিং সোশ্যাল মার্কেটিং প্রজেক্ট’ হিসেবে এসএমসির যাত্রা শুরু হয়েছিল। জন্মনিয়ন্ত্রণসামগ্রী—বিশেষ করে খাওয়ার বড়ি ও কনডম মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়াই ছিল এসএমসির প্রথম দিকের কাজ। এখন সারা দেশে ব্যবহার করা পরিবার পরিকল্পনাসামগ্রীর প্রায় অর্ধেক এসএমসির সামগ্রী।
খাওয়ার স্যালাইন ও পরিবার পরিকল্পনাসামগ্রী ছাড়াও এসএমসির অনেক পণ্য বাজারে আছে। এর মধ্যে রয়েছে অণুপুষ্টি পাউডার, ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকস, কৃমিনাশক বড়ি, স্যানিটারি ন্যাপকিন, বেবি ডায়াপার, ফর্টিফায়েড বিস্কুট।
৫০ বছরে এসএমসির সেরা পণ্য কোনটি—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এসএমসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তছলিম উদ্দিন খান বলেন, এ দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এসএমসির জন্মনিয়ন্ত্রণসামগ্রীর বড় ভূমিকা আছে। কিন্তু এসএমসির ওরাল স্যালাইন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। ওরাল স্যালাইন বহু মানুষের জীবন রক্ষা করেছে। বছরে ১৫০ কোটি ওরাল স্যালাইনের প্যাকেট বিক্রি করে এসএমসি।
এসএমসি অলাভজনক একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১৪ সালে এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড নামে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়। সেখান থেকে যে লাভ আসে, তা জনস্বাস্থ্য কর্মসূচিতে বিনিয়োগ করা হয় বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
স্বাগত বক্তব্যে এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন নাসির বলেন, ৫০ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছে এমএমসি। সারা দেশের মানুষ এসএমসির সব ধরনের পণ্যের ওপর আস্থা রাখেন।
মিট দ্য প্রেসে সভাপতির বক্তব্য দেন এসএমসি ও এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওয়ালিউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে এসএমসির নতুন স্লোগান উন্মুক্ত করা হয়। তা হলো—‘পঞ্চাশের উচ্ছ্বাসে, একসাথে আগামীতে।’
এর আগে এক প্রশ্নের জবাবে এসএমসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তছলিম উদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, আগামী দিনে মাতৃস্বাস্থ্য, কিশোরী স্বাস্থ্য, বাল্যবিবাহ কমানো—এসব বিষয়ে জোর দিয়ে কাজ করবে এসএমসি। এখন ১২০টি উপজেলায় এসব নিয়ে কাজ করে তারা। দেশের প্রায় প্রতিটি পরিবারে এসএমসির কোনো না কোনো পণ্য পৌঁছেছে। সারা দেশে আট লাখ স্থান (আউটলেট) থেকে এসএমসির পণ্য বিক্রির জন্য বিতরণ করা হয়।
এসএমসি ও এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডে বর্তমানে সাড়ে চার হাজার মানুষ কাজ করেন। চারটি কারখানায় এসএমসির পণ্য তৈরি হয়। শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দাতাপ্রতিষ্ঠান ইউএসএআইডি প্রতিষ্ঠানটিকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে।