রমজান ও গরমের মৌসুমে এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রিতে রাখতে হবে, না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন

জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানছবি: প্রথম আলো

আসন্ন পবিত্র রমজান ও গরমের মৌসুমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের (এসি) তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার ওপরে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ অনুরোধ উপেক্ষা করা হলে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন কিংবা অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ সোমবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে নিজ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জ্বালানি উপদেষ্টা। সেখানে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন পবিত্র রমজান ও গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবেন বলে আশা করছেন। শীত মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা ৯ হাজার মেগাওয়াট। আর গ্রীষ্ম মৌসুমে এটি বেড়ে হয় ১৭ থেকে ১৮ হাজার মেগাওয়াট। এই পার্থক্য হয় দুটি কারণে। এর মধ্যে একটি হলো সেচ। সেচের জন্য প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট অতিরিক্ত লাগে। এই সেচের বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

উপদেষ্টা বলেন, অন্য কারণটি এসি। এ জন্য প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এসির তাপমাত্রা যদি ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি থাকে, তাহলে দুই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারবেন। তিনি বলেন, এ জন্য উপদেষ্টা পরিষদের সবার কাছে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টার মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সবগুলো ব্যাংক এবং সচিবালয়ের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আধা সরকারি পত্র দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। আর বাসাবাড়িতে এটা কার্যকর করতে সাংবাদিকদের মাধ্যমে সবার প্রতি অনুরোধ জানান উপদেষ্টা।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ব্যবহারের ব্যাপারে কোনো বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার ওপরে রাখতে হবে। বিষয়টি নিয়মিত নজরদারি করবে বিদ্যুৎ বিভাগের বিশেষ দল। যদি দেখা যায় অনুরোধ উপেক্ষিত হয়েছে, কেউ অনুরোধ রাখছেন না, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে; বিদ্যুতের সংযোগও বিচ্ছিন্ন হতে পারে। কিংবা আরও যেসব আইনানুগ ব্যবস্থা আছে, সেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সহায়তা চেয়ে উপদেষ্টা বলেন, সবার সহযোগিতা পেলে রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে একটি ভালো সমন্বয় দেখতে পাবেন।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, তাঁরা যদি বাধ্য হন লোডশেডিং করতে, তাহলে আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের মধ্যে পার্থক্য করা হবে না। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই) ছাড়া সব জায়গায় সমানভাবে লোডশেডিং দেওয়া হবে। তবে তাঁর আশা, এটা করতে হবে না।